রুপোলি: বিষ্ণুপুরের চকবাজারে। নিজস্ব চিত্র
দিকে দিকে এই বার্তা রটে গেল—ইলিশ এসেছে ঝুড়ি ঝুড়ি।
অবশেষে! বর্ষাকালের প্রায় অর্ধেকটা কাবার করে বিষ্ণুপুরের চকবাজারে ইলিশ এল শুক্রবার। চারাপোনার দিকে ফিরেও তাকালেন না বোসবাবু, সেনবাবুরা। ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি মেখে থলি ভরলেন ইলিশেই। সকাল সকাল ছাতা মাথায় প্যান্ট গুটিয়ে থলি হাতে বাহাদুরগঞ্জের বুবাই মুখোপাধ্যায় আর বৈলাপাড়ার কল্লোল মুখোপাধ্যায় বাজারে চলে এসেছিলেন। বললেন, ‘‘খবরের কাগজে দেখছিলাম দিঘার মোহনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠছে। এ বার চোখে দেখলাম। বাড়ি ফিরে চেখে দেখব।’’
দাম? তিনশো থেকে সাতশো গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে চারশো থেকে ছ’শো টাকা দরে। কলেজপাড়ার বাপি মাঝি, সরোজ বল্লভরা বলেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিন লালবাঁধের মাছ খেয়ে মুখটা কীরকম হয়ে গিয়েছিল। একটু স্বাদ বদল দরকার ছিল।’’ তাঁদের মতে, এটাই ইলিশের আসল সময়। এর পরে বিষ্ণুপুরে বাজার ছেয়ে যাবে কুড়কুড়ি ছাতুতে। দামেও টক্কর দেবে ইলিশকে।
ইলিশ নিয়ে ক্রেতার প্রশ্ন শুনতে শুনতে জেরবার হয়ে পড়েছিলেন মাছ ব্যবসায়ীরাও। বিষ্ণুপুর বাজারের রবিলোচন দাস, সাধন ধীবররা বলেন, ‘‘কেন ইলিশ আসছে না, শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলাম। রেগে তো বলতে শুরু করেছিলাম, ইলিশ ধরতে কি পুলিশ পাঠাব?’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রায় আট থেকে ন’কুইন্টাল ইলিশ এসেছে এ বার। বেশির ভাগ মাঝারি মাপের। চক বাজারের মাছ বিক্রেতা সুভাষ ধীবর, গোপাল ধীবর, লক্ষ্মী কোটাল, শিবানী ধীবররা বলেন, ‘‘সারা বছর তো রুই কাতলা বেচি। ইলিশ বাজারে এলে আমাদেরও ভাল লাগে।’’
বিষ্ণপুরে এখন বিভিন্ন পাড়ায় হেঁসেল থেকে এ দিন ভেসে এসেছে ইলিশের গন্ধ। সুতপা আদক, বিউটি সেনরা বলেন, ‘‘পাতুরি হচ্ছে। ভাপা হচ্ছে। আর তেল! ওটাই তো আসল।’’ শহরের চিকিৎসক সুব্রত বিশ্বাসও জানাচ্ছেন, পরিমিত ইলিশ হার্টের পক্ষেও ভাল, মাংসের তুলনায় তো বটেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy