Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

দু’কিমি দূরে জল, শ্রোতা সভাধিপতি

জেলাবাসী কেমন আছেন? খোঁজ নিতে বেরিয়ে বেলিয়াতোড়ের সামন্তমারা আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দাদের নানা অভাব-অভিযোগ শুনলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নতুন সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু। বাসিন্দারা তাঁর কাছে অভিযোগ করেন, জল আনতে যেতে হয় প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে।

পাশে: বেলিয়াতোড়ের সামন্তমারা আদিবাসী পাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

পাশে: বেলিয়াতোড়ের সামন্তমারা আদিবাসী পাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলিয়াতোড় শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪১
Share: Save:

জেলাবাসী কেমন আছেন? খোঁজ নিতে বেরিয়ে বেলিয়াতোড়ের সামন্তমারা আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দাদের নানা অভাব-অভিযোগ শুনলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নতুন সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু। বাসিন্দারা তাঁর কাছে অভিযোগ করেন, জল আনতে যেতে হয় প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে। বহু বাসিন্দার নামে নেই জমির রেকর্ডও। তাই হাতিতে ঘর ভাঙলে মেলে না ক্ষতিপূরণ। এই সমস্যার জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে সভাধিপতিকে জানান।

বেলিয়াতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সামন্তমারা গ্রামের ওই এলাকায় কমবেশি ২৫ ঘর আদিবাসী পরিবারের বাস। মঙ্গলবার ওই গ্রামে স্থানীয় মানুষের সমস্যা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন সভাধিপতি। জঙ্গল সংলগ্ন এই আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, বাম আমলেই বন দফতরের তরফে এখানকার বাসিন্দাদের পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রেকর্ডে কিছু গোলমাল থাকায় জায়গাগুলি তাঁদের নামে নথিভুক্ত করানো যায়নি। এ দিকে জঙ্গল থেকে হাতি বার হয়ে প্রায়ই গ্রামে ঢুকে পড়ে ঘর ভাঙে। কিন্তু, জমি তাঁদের নামে না থাকায় ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারেন না তাঁরা।

সমস্যা রয়েছে আরও। গ্রামে একটিই মাত্র টিউবওয়েল। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বেশ কয়েক মাস ধরে সেই টিউবওয়েল খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। গ্রামে একটি কুয়ো থাকলেও তার জল ব্যবহারের অযোগ্য বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। তাঁদের দাবি, গ্রাম থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে একটি মুরগি খামার রয়েছে। সেখান থেকে তাঁরা জল নিয়ে যান। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক স্কুলও ওই গ্রাম থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে। স্থানীয় বাসিন্দা শিবনাথ হাঁসদা বলেন, “রাজ্যে পালাবদলের পরে সব জায়গাতেই উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সমস্যা মিটছে না। আমরা চাই প্রশাসন আমাদের এলাকার সমস্যা মেটাতে এ বার উদ্যোগী হোক।”

মৃত্যুঞ্জয়বাবু বলেন, “আমি ওই এলাকার মানুষজনের সমস্যা সরেজমিনে দেখতেই গ্রামে গিয়েছিলাম। জমি সংক্রান্ত যে সমস্যাটি রয়েছে, তা মেটাতে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসব। গ্রামে শীঘ্রই একটি সাব মার্সিবল পাম্প বসানো হবে জেলা পরিষদের তরফে। বাকি সমস্যাগুলি মেটাতেও যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।”

আদিবাসীপাড়ার সামগ্রিক সমস্যার জন্য বামফ্রন্ট সরকারকে দায়ী করেছেন বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির ওই এলাকার সদস্য কালীদাস মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘এখানকার মানুষদের নাম বিপিএল তালিকা থেকে বামফ্রন্ট সরকারই বাদ দিয়েছে। এই জটিলতার জন্য ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রশাসনিক নানা সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না। তার মধ্যেও যতটা পরিষেবা দেওয়া যায় আমরা দিচ্ছি।’’ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বড়জোড়ার সিপিএম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী পাল্টা দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল নিজেদের দোষ ঢাকতেই এখন আমাদের উপর দায় চাপাচ্ছে। বর্তমান সরকারের নীতি ও নানান জটিলতার জন্যই বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার মানুষজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Water Crisis Beliatore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE