Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফের প্রকাশ্যে ‘দ্বন্দ্ব’

প্রসেনজিৎবাবুর সাফ বক্তব্য, ‘‘মন্ত্রীর কর্মসূচিতে যোগ না দিয়ে একই সময়ে অন্য কর্মসূচি করা আমার মতে দলবিরোধী কাজ।” শ্যামনারায়ণবাবুর যুক্তি ‘‘মন্ত্রীর কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। আমরা ভাগাবাঁধ গ্রামে কর্মসূচি নিয়েছিলাম।’’ 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
হুড়া শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৯
Share: Save:

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হুড়ায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এল। রবিবার বিকেলে মানবাজারের দলদলি পঞ্চায়েতের দলদলি গ্রামে ‘জন সংযোগ’ কর্মসূচিতে যোগ দেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো।

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সেখানে দেখা যায়নি হুড়ার ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামনারায়ণ মাহাতো এবং তাঁর অনুগামীদের। মন্ত্রীর কর্মসূচি ‘এড়িয়ে’ তিনি হাজির ছিলেন ওই পঞ্চায়েতেরই ভাগাবাঁধ গ্রামে অন্য একটি ‘জন সংযোগ’ কর্মসূচিতে। দলের একাংশের ব্যাখ্যা, মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকায় সেখানে গরহাজির ছিলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি।

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে হাজির না থাকায় শ্যামনারায়ণবাবুকে নিশানা করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। প্রসেনজিৎবাবুর সাফ বক্তব্য, ‘‘মন্ত্রীর কর্মসূচিতে যোগ না দিয়ে একই সময়ে অন্য কর্মসূচি করা আমার মতে দলবিরোধী কাজ।” শ্যামনারায়ণবাবুর যুক্তি ‘‘মন্ত্রীর কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। আমরা ভাগাবাঁধ গ্রামে কর্মসূচি নিয়েছিলাম।’’

তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ সন্ধ্যারানিদেবী। তাঁর বক্তব্য ‘‘দলের মধ্যে কোনও গোষ্ঠী নেই। সকলে একসঙ্গে কাজ করছেন। দলদলিতে জন সংযোগ করেছি। পরে ভাগাবাঁধ গ্রামেও সকলকে নিয়ে ওই কর্মসূচি পালন করব।”

প্রায় সর্বত্রই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে বিধায়কের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের স্থানীয় এবং ব্লক নেতৃত্বকে। কিন্তু রবিবারের কর্মসূচিতে হুড়ার ব্লক সভাপতির অনুপস্থিতি দলের দুই গোষ্ঠীর ‘বিবাদ’কে প্রকাশ্যে এনেছে বলেই মনে করছেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।

শ্যামনারায়ণবাবুর অনুগামী নেতাদের কেউ কেউ দাবি করেছেন, দলদলিতে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রসেনজিৎবাবু থাকায় তাঁরা সেখানে যাননি। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ব্লক কমিটির নেতাদের অন্ধকারে রেখে পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনা করছেন প্রসেনজিৎবাবু। আমরা যাঁদের নাম সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তা হিসাবে প্রস্তাব করছি, তাঁদের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে বাদ দিচ্ছেন তিনি।’’ উল্টোদিকে প্রসেনজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘দল আমাকে সমিতির সভাপতি করেছে। ব্লক সভাপতি সমিতির কাজকর্মে সাহায্য করছেন না। পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনেও তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন।”

তৃণমূল সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই দলে ‘দ্বন্দ্ব’ অব্যাহত। হুড়া ব্লকে জেলা পরিষদের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে শুরু হয়েছিল সেই ‘বিবাদ’। ব্লক নেতৃত্বের একাংশ চেয়েছিলেন, জেলা পরিষদের একটি আসনে প্রার্থী করা হোক শ্যামনারায়ণবাবুকে। অন্য গোষ্ঠীর সমর্থন ছিল কাশীপুরের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার প্রতি। শেষ পর্যন্ত দল প্রার্থী করেছিল সৌমেনবাবুকে। এর পরে শ্যামনারায়ণবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত প্রসেনজিৎবাবুকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি করায় দলে ‘ফাটল’ আরও চওড়া হয়েছে বলে মনে করছেন নেতৃত্বের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hura TMC Didi Ke Bolo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE