Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
fire

গুদাম ছাই, দমকল কেন্দ্র নেই কেন প্রশ্ন শিল্পাঞ্চলে

হতাহতের কোনও খবর নেই বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে ছাই হয়ে গিয়েছে ভিতরে থাকা ফোম, রাবার, পেটি। কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের মতে, এই শিল্পাঞ্চলে দমকল কেন্দ্র থাকলে পরিস্থিতি এ ভাবে হাতের বাইরে চলে যেত না।  

মোকাবিলা: ভাঙা হচ্ছে দেওয়াল। হাটআশুড়িয়ার গুদামে। নিজস্ব চিত্র

মোকাবিলা: ভাঙা হচ্ছে দেওয়াল। হাটআশুড়িয়ার গুদামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩৯
Share: Save:

আগুনে পুড়ে গেল বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়া মোড়ের একটি বেসরকারি কারখানার গুদাম। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আগুন লাগে বলে কারখানা সূত্রের খবর। আধ ঘণ্টা পরে, দুর্গাপুর থেকে দমকলের চারটি ইঞ্জিন এসে ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হতাহতের কোনও খবর নেই বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে ছাই হয়ে গিয়েছে ভিতরে থাকা ফোম, রাবার, পেটি। কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের মতে, এই শিল্পাঞ্চলে দমকল কেন্দ্র থাকলে পরিস্থিতি এ ভাবে হাতের বাইরে চলে যেত না।

কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে রাহুল ভজনেওয়ালা আগরওয়াল জানান, তাঁরা রেলের জন্য রবারের প্যাড তৈরি করেন। কাজ করেন জনা তিরিশ শ্রমিক। শনিবার সকালেও ওই গুদামে জিনিস রাখা হয়েছিল। তাঁর দাবি, আগুন লাগার পরে, দমকলে খবর দেওয়ার পাশাপাশি, কারখানার নিজস্ব পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে নেভানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চাশটিরও বেশি আগুন নেভানোর রাসায়নিকের ট্যাঙ্ক খালি হয়ে যায়। তখনও দাউদাউ করে জ্বলছে গুদামের দোতলা। ফাটল ধরছে দেওয়ালে। ক্রমশ কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় চারপাশ। বড়জোড়া থেকে হাটআশুড়িয়া যাওয়ার রাস্তাও ঘন কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।

এ দিন বিকেল ৪টের পরেও গুদামের কোনও কোনও জায়গায় আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছিল। যন্ত্র দিয়ে ভেঙে ফেলতে হয়েছে গুদামের এক দিকের দেওয়াল। বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে কোনও দমকলকেন্দ্র নেই। কিছু হলে দমকল আসে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার থেকে। দমকলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্গাপুর থেকে এ দিকে আসার সময়ে খুব চিন্তায় থাকি। যদি ব্যারাজে যানজটে পড়ি, তা হলেই হয়ে গেল! এ দিন তা-ও আধ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছতে পেরেছি।’’

আগুন লাগার খবর পেয়ে ওই গুদামে যান আইএনটিটিইউসির বড়জোড়া ব্লক সভাপতি অলোক মুখোপাধ্যায়। তিনি এলাকায় দমকলকেন্দ্রের গুরত্বের কথা বলেছেন। সিটুর এলাকার নেতা বানেশ্বর গুপ্ত বলেন, ‘‘বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে চল্লিশটির মতো কারখানা রয়েছে। কিন্তু কোনও দমকল কেন্দ্র নেই। বারবার বলার পরেও কিছু হয়নি।’’ তবে শুধু দমকল নয়, কারখানাগুলির অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের নেতা গোবিন্দ ঘোষ। তাঁর দাবি, কারখানাগুলিতে আগুন নেভানোর কী ব্যবস্থা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার।

বড়জোড়ার সিপিএম বিধায় সুজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি বছর দুয়েক আগেই রাজ্য দমকল বিভাগের কাছে বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে একটি কেন্দ্র করার কথা বলেছিলাম। তা হয়নি। আজ এই ঘটনার পরে ওঁরা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, শিল্পাঞ্চলে অন্তত একটি দমকলকেন্দ্র গড়া কতটা জরুরি।’’ কী ভাবে ওই গুদামে আগুন লেগেছিল, সে বিষয়ে ধন্দে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তদন্তের আগে কিছু বলতে চায়নি দমকলও। বাঁকুড়া চেম্বার অফ কমার্সের (শিল্প) যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর সরকার জানান, বড়জোড়ায় একটি দমকলকেন্দ্র করার কথা রাজ্য স্তরে জানানো হয়েছে। বিডিও (বড়জোড়া) ভাস্কর রায় বলেন, ‘‘লিখিত প্রস্তাব এলে নিশ্চয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Fire Brigade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE