Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Biswakarma Puja

বিশ্বকর্মা পুজোয় জৌলুসহীন শিল্পাঞ্চল

জেলা পাথর ব্যাবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক কমল খান জানান, ২০১০ সাল থেকে পাথর শিল্পাঞ্চল গুলিতে বিশ্বকর্মার পুজোর আনন্দ হারাতে বসেছে।

বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন ফল কেনা। কীর্ণাহারে। নিজস্ব চিত্র

বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন ফল কেনা। কীর্ণাহারে। নিজস্ব চিত্র

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:২৭
Share: Save:

বিশ্বকর্মা পুজো মানে কারখানায় বসে একসঙ্গে মালিকদের সঙ্গে শ্রমিকদের খাওয়া-দাওয়া। কোথাও আবার শ্রমিকদের আনন্দদানের জন্য কারখানা এলাকায় গান-বাজনার আসর। বছর পাঁচেক আগেও জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলগুলিতে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন মালিক ও শ্রমিকপক্ষ একসঙ্গে আনন্দে ঘুড়ি ওড়াত। বর্তমানে জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলগুলির অচলাবস্থায় বিশ্বকর্মা পুজোর সেই জৌলুস হারিয়েছে।

জেলা পাথর ব্যাবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক কমল খান জানান, ২০১০ সাল থেকে পাথর শিল্পাঞ্চল গুলিতে বিশ্বকর্মার পুজোর আনন্দ হারাতে বসেছে। বছর পাঁচেক হল সেই আনন্দ একেবারেই হারিয়ে গিয়েছে। এখন খালি যন্ত্রের পুজো হয়।

বছরের একটা দিন আনন্দের অপেক্ষায় থাকা শ্রমিক-মালিকেরা এখন হতাশায় রয়েছেন। তাঁদের কাছে এখন পাথর শিল্পাঞ্চলগুলির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলের মালিকরা এখন পাথর ভাঙা কারখানায় ম্যানেজারদের দিয়ে পুরোহিত ডেকে কারখানার যন্ত্রগুলির পুজো করেন। বছরের এই একটি দিনের অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকরা কারখানা বন্ধ থাকলেও কারখানায় এসে পুজোর প্রসাদটুকু নেন।

রামপুরহাট পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক মুস্তাক শেখ জানান, রামপুরহাট থানার বারমেসিয়া, বড়পাহাড়ি, দীঘলপাহাড়ি, ধরমপাহাড়ি এলাকার প্রায় ২৫০টি পাথর ভাঙার কারখানা ঝাড়খণ্ডের পাথর খাদান থেকে পাথর কিনে চালু ছিল। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার লড়িপাহাড়ি এলাকায় পাথর বোঝাই গাড়ি থেকে অস্বাভাবিক হারে তোলাবাজি চলছে।

সেই কারণে দশ দিন থেকে রামপুরহাট থানা এলাকায় ২৫০ পাথর ভাঙা কারখানা বন্ধ। কারখানার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত প্রায় কুড়ি হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাই এ বার বিশ্বকর্মা পুজোয় মন ভাল নেই কারও। আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন শ্রমিকেরা কারখানায় এসে আনন্দ করতেন। কারখানায় বসে অনেকে খাওয়া দাওয়া করতেন। কিন্তু আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পাথর ব্যবসায়ীদের বিশ্বকর্মা পুজো ঘিরে আর উৎসাহ নেই। আগের মতো কারখানায় মূর্তি গড়ে আর পুজোর প্রচলন কমে গিয়েছে। কেবলমাত্র যন্ত্রের পুজো করে অনেকেই বাড়ি চলে আসবেন।

বীরভূম জেলা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষে আসগার আলি জানান, জেলার সবচেয়ে বড় শিল্প হচ্ছে পাথর শিল্প। হাজার হাজার শ্রমিক এর উপরে নির্ভরশীল। ছোট বড় অনেক ব্যবসায়ীও ঋণ করে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর কথায়, ‘‘এখন পাথর বিক্রির বাজার নেই। কারখানায় কাজ কম। ফলে রাজগ্রাম বা মুরারই পাথর শিল্পাঞ্চল গুলিতে বিশ্বকর্মা পুজো ঘিরে আর সেই জাঁক নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Biswakarma Puja Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE