Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বেঙ্গালুরুতে মৃত যুবকের দেহ ফিরে এল গ্রামে

তবে এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা জানিয়েছেন, তাঁর কাছে দুর্ঘটনার কোনও খবর নেই।

মৃত সুমন্ত কর।

মৃত সুমন্ত কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৯ ০২:০৯
Share: Save:

সামনের দুর্গাপুজোয় বাড়ি ফেরার কথা ছিল সুমন্তর। তার অনেক আগেই ফিরলেন তিনি। তবে কফিনবন্দি হয়ে।

বৃহস্পতিবার ভোটে খাতড়ার সুমন্ত করের (২৫) দেহ ফিরেছে বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের পিড়রাবাকড়া গ্রামের কুঁড়ে ঘরে। বছর তিনেক আগে কর্ণাটকে এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতে গিয়েছিল সুমন্ত। গত সোমবার বেঙ্গালুরুতে একটি জলের ট্যাঙ্ক ধসে পড়ে। পরিবারের দাবি, তার তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় সুমন্তের।

তবে এসডিপিও (খাতড়া) বিবেক বর্মা জানিয়েছেন, তাঁর কাছে দুর্ঘটনার কোনও খবর নেই। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যা থেকে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন। কিন্তু খাতড়ার কোনও যুবক বেঙ্গালুরুতে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন, এমন খবর আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। তবে খোঁজখবর নিচ্ছি।’’

সোমবার সন্ধ্যায় ফোনে দাদার মৃত্যুর খবরটা পাওয়ার পর বোন মুনমুনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল। গত দু’দিনে ঘনঘট জ্ঞান হারিয়েছেন সুমন্তের মা বিভারানি। বাকরুদ্ধ বাবা গুণময়বাবু। পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ঘর থেকে মাঝেমধ্যেই ভেসে আসছে কান্নার শব্দ।

এ দিন ভোরে সুমন্তের দেহ ফেরে। সুমন্তর কাকা গৌতমবাবু জানান, বেঙ্গালুরুতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল সোমবার দুপুরে। তার পরে ফোনে আসে ভাইপোর মৃত্যু সংবাদ। মৃতের মাসতুতো দাদা সোমনাথ সিংহমহাপাত্র জানান, প্রতি ছ’মাসে বা বছরে এক বার বাড়ি ফিরতেন সুমন্ত।

গৌতমবাবু জানিয়েছেন, সুমন্তদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। তাই বাধ্য হয়েই সুমন্ত ভিন রাজ্যে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। সুমন্তের মৃত্যুতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মুনমুনের পড়াশোনা। খাতড়া আদিবাসী মহাবিদ্যালয়ে ইতিহাস অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মুনমুন জানান, সুমন্ত কোন সংস্থায় কাজ করত তা তাঁর জানা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘পরিবারের যাবতীয় খরচও চলত দাদার উপার্জনে। এখন কী হবে, কী ভাবে পড়াশোনা করব, কী ভাবে সংসার চলবে, ভেবে পাচ্ছি না।’’

মুনমুন জানান, গত ১১ মার্চ বাড়ি এসেছিলেন তাঁর দাদা। বেশিদিন ছুটি না মেলায় চার-পাঁচদিন থেকেই ফিরে যেতে হয়। দুর্গাপোজায় বাড়ি ফিরার কথা ছিল। ‘‘দুর্ঘটনার দু’দিন আগে সন্ধ্যায় দাদার সঙ্গে কথা হয়েছিল,’’ কান্নায় গলা বুজে আসে মুনমুনের। প্রতিবেশী মিলন কর, বিপদতারণ করেরা জানান, সুমন্তর পরিবার বিপিএল তালিকাভুক্ত। তবে সুমন্ত কাজ পাওয়ায় পরিবারের অবস্থা কিছুটা ফিরেছিল। সুমন্ত যে সংস্থায় কাছ করতেন, তাদের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানাবে মৃতের পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khatra Bengaluru Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE