Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ি তৈরির টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে

দেড় বছর নিজের খড়ের ছাউনি দেওয়া জীর্ণ বাড়িতে বসবাস করলেও আবাস যোজনার ১ লক্ষ ২০ হাজার  টাকা বাঁটুল ডোমের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। 

বাঁটুল ডোম। —নিজস্ব চিত্র

বাঁটুল ডোম। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৪
Share: Save:

সরকারি আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা প্রকৃত প্রাপকের বদলে ঢুকেছে অন্যের অ্যাকাউন্টে— সম্প্রতি বিডিওর কাছে করা প্রকৃত প্রাপকের এমন অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে, খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাদুলিয়া গ্রামে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূ্ত্রের খবর, ওই গ্রামের হতদরিদ্র বাসিন্দা বাঁটুল ডোমের নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ির টাকা এসেছিল ২০১৭ - ২০১৮ অর্থবর্ষে। তখন তাঁর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্রও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কী কারণে তাঁর কাছ থেকে নথি পত্র চাওয়া হচ্ছে সেটা বোঝেননি প্রান্তিক মানুষটি। তারপর দেড় বছর নিজের খড়ের ছাউনি দেওয়া জীর্ণ বাড়িতে বসবাস করলেও আবাস যোজনার ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বাঁটুল ডোমের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি।

এটা হয়তো অজানাই থেকে যেতো। কিছুদিন আগে ইন্টারনেটে এলাকার কার কার আবাস যোজনায় ঘর এসেছে এটা স্থানীয়েরা দেখতে গিয়ে লক্ষ্য করেন বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে এমন তালিকায় নাম রয়েছে বাঁটুলবাবুর। বিষয়টি জানাজানি হতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বাঁটুল। প্রতিবেশিরাই নির্দিষ্ট সাইটে গিয়ে সেই তথ্যের ফোটোকপি করে তাঁর হাতে দেন। এর পরই তাঁর সঙ্গে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে খয়রাশোলের বিডিও সঞ্জয় দাস-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত আবেদন করেন বাঁটুল। তাঁর দাবি, আমার প্রাপ্য বাড়ি আমাকে দেওয়া হোক। দোষীর উপযুক্ত শাস্তি হোক।

খয়রাশোলের বিডিও সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘আমি পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট আধিকারিককে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করিয়েছি। প্রাথমিক ভাবে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে বাঁটুল ডোমের পরিবর্তে সেই টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। আমরা ব্লক প্রশাসনের তরফে মৌখিকভাবে সেই অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে টাকা ফেরত দিতে বলেছি। দিন কয়েক দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’’ নথি পর্যালোচনার সময় বিচ্যুতি হয়েছে একথা জানালেও গাফিলতি কার তা স্পষ্ট করেননি বিডিও।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে আর্থ সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষা অনুয়ায়ী যে সকল পরিবারের পাকা বাড়ি নেই সেগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী প্রতি বছর কেন্দ্র রাজ্যের আংশীদারিত্বে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির অনুমোদন মেলে। প্রতিটি ব্লক পঞ্চায়েত ধরে কোথায় কত বাড়ি হবে সেটা ঠিক করে রাজ্য প্রশাসন। ব্লক থেকে টাকা উপভোক্তা বা প্রকৃত প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে ছাড়া হলেও তালিকা এলে সেটা মিলিয়ে দেখে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করার কথা

গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির। ত্রুটি কী সেখানেই? নাকি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এটা হল ব্লক প্রশাসনের সেটা এখনও অজানা। তবে ভাদুলিয়া গ্রামের সকলেই চাইছেন বাঁটুলের পাকা বাড়ি হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khayrasole Pradhan Mantri Awas Yojana Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE