Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ধন্দ কাটেনি দম্পতি খুনে
Birbhum

নমুনা সংগ্রহ ফরেন্সিক দলের

কল্লোলবাবু স্ত্রী আর একমাত্র ছেলে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাজদীপকে নিয়ে ব্যবসার সূত্রে আসানসোলে থাকেন। বাবা-মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে শুক্রবারই ব্রাহ্মণপাড়ার বাড়িতে ছুটে আসেন।

পাঁচিল টপকেই খুনি পালায় বলে অনুমান পুলিশের। চলছে তদন্ত। ছবি: কল্যাণ আচার্য

পাঁচিল টপকেই খুনি পালায় বলে অনুমান পুলিশের। চলছে তদন্ত। ছবি: কল্যাণ আচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৪২
Share: Save:

ঠিক কী কারণে খুন হলেন লাভপুরের বয়স্ক দম্পতি, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে জেলা পুলিশ। শনিবার এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামে ওই দম্পতির বাড়িতে গিয়ে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেন। তাঁর রিপোর্টের উপরে পুলিশ নির্ভর করে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে নিজেদের শোওয়ার ঘরে খুন হন লাভপুরের ব্রাহ্মণপাড়ার দম্পতি পূর্ণেন্দু এবং স্বপ্না চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান ছিল, চুরির উদ্দেশ্যে ওই দম্পতির মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে। যদিও বাড়ি থেকে তেমন কিছু খোয়া যায়নি বলে নিহত দম্পতির পরিবার সূত্রে জানানো হয়। সূত্র উদ্ধারের জন্য ৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা।

এ দিন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকার টানা আড়াই ঘণ্টা ধরে ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ির পিছনের দিকে একটি পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশের অনুমান, ওই দিক দিয়েই আততায়ীরা পালিয়ে যায়। সেই ছাপটি এ দিন মাপজোক করা হয়। চিত্রাক্ষ বলেন, ‘‘বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শীঘ্রই রিপোর্ট চলে আসবে।’’

পুলিশেরই একটি সূত্রের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা জেনেছে, স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে সুদে টাকা খাটাতেন ওই দম্পতি। সেই লেনদেন ঘটিত ব্যাপারে দম্পতি খুন হয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও সূত্র উদ্ধারের উদ্দেশ্যে পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’’

যদিও নিহত দম্পতির এক মাত্র ছেলে কল্লোল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাবা-মা সুদের কারবারে জড়িত থাকতে পারেন বলে বিশ্বাস হয় না। তেমন কিছু হলে আমি নিশ্চয় জানতে পারতাম। তা ছাড়া, শারীরিক অসুস্থতার কারণে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচ বছর আগেই বাবা স্বেচ্ছা অবসর নেন। সেই মানুষ টাকার জন্য সুদ খাটাবেন?’’

কল্লোলবাবু স্ত্রী আর একমাত্র ছেলে, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাজদীপকে নিয়ে ব্যবসার সূত্রে আসানসোলে থাকেন। বাবা-মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে শুক্রবারই ব্রাহ্মণপাড়ার বাড়িতে ছুটে আসেন। এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পরে মৃতদেহ নিয়ে আসানসোলে সৎকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কল্লোলবাবুর কথায়, ‘‘এ বার পুজোয় বাবা-মায়ের আসানসোলে যাওয়ার কথা ছিল। পুজোর আগে তাঁদের মৃতদেহ নিয়ে যেতে হচ্ছে।’’ তিনি জানালেন, ছেলে খুব বিমর্ষ হয়ে পড়েছে। দাদু-ঠাকুরমার খুব প্রিয় ছিল সে। পুজোয় তাঁদের সঙ্গে আনন্দে কাটবে ভেবেছিল। সেটা আর হল না। এ দিন কলকাতা থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে এসে পৌঁছন স্বপ্নাদেবীর এক বৌদি মালা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে। ভাল মানুষ দুটোকে এ ভাবে খুন হতে হবে, ভাবতেই পারছি না।’’ভাবতে পারছেন না গ্রামবাসীরাও। এ দিনও গ্রামের জটলায় ওই খুনের ঘটনাই আলোচ্য বিষয় ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Labhpur Murder Birbhum Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE