Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাশে আছি, বাহিনীর বার্তা পদুমায়

১৪ এপ্রিল পদুমা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বোধগ্রামে গিয়ে প্রচারে ‘বাধা’ পেয়েছিলেন বীরভূম কেন্দ্রের  বামপ্রার্থী রেজাউল করিম। অভিযোগ ছিল তৃণমূলের দিকে। ১৭ এপ্রিল সকালে বসহরি গ্রামে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখতে দিয়ে  ‘আক্রান্ত’ হন গ্রামের বেশ কিছু মানুষ।

কথোপকথন: গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বাহিনীর। শনিবার দুবরাজপুরের পদুমার বসহরি গ্রামে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

কথোপকথন: গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বাহিনীর। শনিবার দুবরাজপুরের পদুমার বসহরি গ্রামে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর ও মুরারই শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে কেউ প্রচারে ‘বাধা’ পেয়েছিলেন, কেউ দেওয়াল লেখায়। শনিবার দুবরাজপুরের ‘স্পর্শকাতর’ সেই পদুমা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই টহল শুরু করল কেন্দ্রীয় বাহিনী।

১৪ এপ্রিল পদুমা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বোধগ্রামে গিয়ে প্রচারে ‘বাধা’ পেয়েছিলেন বীরভূম কেন্দ্রের বামপ্রার্থী রেজাউল করিম। অভিযোগ ছিল তৃণমূলের দিকে। ১৭ এপ্রিল সকালে বসহরি গ্রামে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখতে দিয়ে ‘আক্রান্ত’ হন গ্রামের বেশ কিছু মানুষ।

বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ ছিল, দেওয়াল লেখার অভিযোগে বিনা প্ররোচনায় ওই দলের কয়েক জন কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ঘর ভাঙচুর করে, বেধড়ক মারধরে ১৪ জন জখম হয়। তাঁদের মধ্যে ৭ জন সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের কারও মাথা ফেটেছে, কারও হাত ভেঙেছে। দুষ্কৃতীদের আক্রমণের হাত থেকে বাদ যানিনি মহিলা ও শিশুরা।

তখন তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে রেজাউলের প্রশ্ন ছিল, ‘‘কেন এক জন প্রার্থী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট প্রচার চালাতে পারবেন না?’’ জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রুট মার্চ করে শান্তি ফেরাতে হবে বলে দাবি তুলেছিলেন রেজাউল। বসহরির ঘটনায় পুলিশ প্রকৃত ব্যবস্থা নেয়নি বলে জেলা পুলিশ সুপার ও পুলিশ অবজার্ভারের কাছে নালিশ ঠুকেছিল বিজেপিও।

তার পরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ। পদুমার বোধগ্রামে গিয়ে তেমন কিছু না শুনলেও, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সামনে পেয়ে এলাকার অশান্ত পরিবেশ নিয়ে একগুচ্ছ নালিশ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা ভয়ে রয়েছি। কিছু করুন।’’ বাহিনীর জওয়ানেরা কোনও প্রত্যুত্তর না করলেও, পুলিশ ও বাহিনী পাশে রয়েছে বলে আশ্বাস দেন বাহিনীর সঙ্গে থাকা দুবরাজপুর থানার এক আধিকারিক।

১৫ মার্চ এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী (বিএসএফ) এসে কয়েক দিন ‘এরিয়া ডমিনেশন’ করার পরে, প্রথম দফা ভোটের আগেই জেলা ছাড়ে। তার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় অশান্তি শুরু হয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের।

বীরভূমের জন্য কত কোম্পানি বাহিনী আসবে সেটা চূড়ান্ত না হলেও, প্রশাসনিক মহলের কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে, বাহিনী আসবে ৭০ কোম্পানিরও বেশি। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই জেলায় দুই কোম্পানি বাহিনী পৌঁছেছে। শনিবার দুবরাজপুরে সিআইএসএফ পৌঁছতেই যাত্রা ও এবং পদুমার কয়েকটি গ্রামে টহল দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। সেই তালিকায় বোধগ্রাম ও বসহরি ছিল।

‘‘কোনও ভয় নেই তো ভোট দিতে?’’— বাহিনীর সামনে থেকে প্রতিটি গ্রামে গিয়ে পুলিশ আধিকারিকেরা মানুষের কাছে সে কথা জানতে চাইছিলেন। সেকেন্দারপুর থেকে আঁরোয়া সহ অন্যান্য গ্রামে কোনও অনুযোগ না থাকলেও, আঁরোয়া থেকে পদুমা যাওয়ার পথে বসহরি গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পেয়ে অভিযোগ জানাতে ভোলেননি স্থানীয়েরা। বিজেপি ও সিপিএম এ নিয়ে বলছে, শুধু অভিযোগ শোনা নয়, চাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

অন্য দিকে, ভোটের ৯ দিন আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল শুরু হল মুরারইয়েও। এ দিন সকাল থেকে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ও মুরারই থানার পুলিশ টহল দেয় রাজগ্রাম, গোড়শা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে। নির্বাচন কমিশন ও মুরারই থানার আধিকারিকেরা ভোটারদের জিজ্ঞাসা করেন— ‘‘কোন রাজনৈতিক দল ভয় দেখাচ্ছে কি না? কেউ তা করলে আমাদের ফোন করবেন।’’ তবে গ্রামবাসীদের একাংশ জানান, তেমন কোনও ঘটনা সেখানে ঘটেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মুরারই
বাজারে টহল দেয়। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া গ্রাম কনকপুর গ্রামেও যায়। সেখানে মুরারই ১ ব্লকের যুগ্ম বিডিও সন্দীপন প্রামাণিক ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 CRPF Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE