Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কথ্য ভাষায় প্রচার

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একদিন ব্লকেরই এক কর্মীর মোবাইলে ফোন করেছিলেন কাশীপুরের বিডিও সুচেতনা দাস।

দেওয়ালে ভোটের ছড়া। কাশীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

দেওয়ালে ভোটের ছড়া। কাশীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
কাশীপুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫৫
Share: Save:

ভোটদাতাদের বুথমুখি করতে কাশীপুর ব্লক প্রশাসনের হাতিয়ার মানভূমের কথ্য ভাষা এবং জনপ্রিয় গানের সুরের সংমিশ্রণে তৈরি ছড়া।

জেলার জনপ্রিয় গানের কথার সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে মানভূমের কথ্য ভাষায় ‘ভোটদানের’ আহ্বান জানাচ্ছে প্রশাসন। রচিত হয়েছে ছড়া। লিখেছেন ব্লকের ‘নির্বাচন সেলের’ কর্মীরা। ইতিমধ্যেই সেই ছড়ায় ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্লক কার্যালয়ের দেওয়াল। কাশীপুর ব্লক প্রশাসনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। এই উদ্যোগ জেলার অনত্র ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন আধিকারিকেরা।

কী ভাবে বাস্তবায়িত হল এই উদ্যোগ।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একদিন ব্লকেরই এক কর্মীর মোবাইলে ফোন করেছিলেন কাশীপুরের বিডিও সুচেতনা দাস। সেই কর্মীর মোবাইলের ‘কলার টিউন’ ছিল পুরুলিয়ার জনপ্রিয় একটি গান। যা শোনার ভোটপ্রচারের এমন পরিকল্পনা মাথায় এসেছিল বিডিও-র। জেলাশাসকের অনুমতি মেলার পর তাঁর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে। সূত্রের খবর, গত শক্রবার কাশীপুর ব্লকে নির্বাচন সংক্রান্ত সভায় হাজির ছিলেন জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন ব্লকের আধিকারিকেরা। জেলাশাসকের সম্মতিও মিলে যায় দ্রুত।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ভোটদানের হার বাড়াতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভোটদাতা এবং মহিলা ভোটারদের ভোটদান যাতে বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে চাইছে কমিশন। এই বিষয়ে এক গুচ্ছ নির্দেশ এসেছে জেলায়। ভোটদানের হার বাড়াতে জেলা প্রশাসন ভোট প্রচারের বেশ কয়েকটি নতুন পন্থা খুঁজে বের করেছে। নবতম পন্থাটি হলো গানের সুরের সঙ্গে কথ্য ভাষায় সংমিশ্রণে তৈরি ছড়া। এ প্রসঙ্গে বিডিও-র মন্তব্য, ‘‘জেলার মানুষ যে ভাষায় কথা বলেন সেই ভাষা ব্যবহার করে সহজেই তাঁদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়।”

ব্লক কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের লেখা হয়েছে ‘পিঁদাড়ে পলাশের বনল ভোটটা দিব যখন। ভিভিপ্যাটটা দেইখে লিব। সাত সেকেন্ডের মতন।’ কোথাও আবার লেখা হয়েছে, ‘নাইবা আমি হাটতে পারি, হুইল চেয়ারে যাব, ভোট বাবুদের সাহায্য লিয়ে, নিজের ভোট নিজে দেব।’ আরেক জায়গায় লেখা হয়েছে ‘হেঁ গো নুনীর মাই, তোর কাজকম্ম রাখ, আগুতে চল গাঁয়ের ইসকুলে, ভোটটা দিয়েই আসা যাক।’

ব্লক প্রশাসনের দাবি, প্রথম পর্যায়ে ব্লক কার্যালয়ের দেওয়ালে লেখা হয়েছে এইসব ছড়া। পরে অন্যান্য সরকারি ভবনের দেওয়ালে, পঞ্চায়েত কার্যালয়ে, স্কুল তথা ভোটকেন্দ্রের দেওয়ালে ছড়াগুলি লেখা হবে। সুচেতনা বলেন, ‘‘শুধু রাজনৈতিক দলগুলি নয়, এবার দেওয়াল লিখনে নেমেছে প্রশাসনও। বিধি অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তিতে রাজনৈতিক ভোটপ্রচার করা যায় না। কিন্তু প্রশাসন ভোটদানের হার বাড়াতে সরকারি ভবনের দেওয়াল ব্যবহার করতেই পারে’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বেশি সংখ্যক ভোটদাতাকে বুথমুখি করতে দেওয়ালে ছড়া লেখার উপরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE