বোলপুরে বামদলের জনসভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি, তৃণমূলে ফারাক নেই বলেই বোলপুরে নির্বাচনী জনসভায় দাবি করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে বুধবার ভোট-প্রচারে এসে তিনি বললেন, ‘‘তৃণমূলকে একটা ভোট দেওয়া মানে আদতে মোদীকে ভোট দেওয়া। মোদীকে ভোট দেওয়া তৃণমূলকে ভোট দেওয়ারই শামিল।’’
সোমবার জেলায় প্রচারে এসে একই ভাবে বিজেপি, তৃণমূলকে বিঁধেছিলেন মহম্মদ সেলিম। এ দিন কার্যত তাঁরই সুরে সুর মেলালেন সূর্যকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘তিন দফা নির্বাচন হয়ে গেল। দেখছি উত্তরবঙ্গে কয়েকটি আসনে বিজেপিকে ময়দান ছেড়ে দিয়েছে তৃণমূল। একই ভাবে মুর্শিদাবাদ থেকে বিজেপি তৃণমূলকে ময়দান ছেড়ে দিয়েছে।’’ সিপিএম নেতার অভিযোগ, কয়েকটি বুথে বিজেপির এজেন্ট তৃণমূলের হয়ে ভোট করছেন। আবার তৃণমূলের এজেন্ট বিজেপির হয়ে ভোট করছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওরা এক জন অন্য জনকে ধরে রেখেছে। আপনাদের দেখাচ্ছে, দু’জন দু’জনকে সহ্য করতে পারছে না।’’
বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে এ দিন সূর্যকান্তের সভা শুরু কথা ছিল দুপুর ৩টেয়। সূর্যকান্ত সভামঞ্চে ওঠেন বিকেল ৪টের পরে। ৪০ মিনিটের ভাষণে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিজেপি ও তৃণমূলকে নিশানা করেন তিনি। বলেন, ‘‘তৃণমূল দল ভেঙে খানখান হয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রায় প্রতি দিন এক বার করে আঙুল গুনে হিসাব কষছেন— কটা গেল বিজেপিতে, কটা থাকল তৃণমূলে। মাঝেমাঝে আবার দেখছেন, সব আছে না বিজেপির সঙ্গে চলে গিয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রে মোদী সরকার থাকবে না। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করব। মোদী যখন গদি ছাড়বেন, তখন থেকে দিদির চেয়ারও টলমল করতে শুরু করবে।’’
বিরোধী দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের হেলিকপ্টারে নির্বাচনী প্রচারে যাওয়া নিয়েও কটাক্ষ করেন সূর্যকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘আকাশ হেলিকপ্টারে ছেয়ে গিয়েছে। কখনও দিদির হেলিকপ্টার তো কখনও মোদীর। মা-মাটি-মানুষের সরকার এখন হেলিকপ্টারের সরকার হয়ে গিয়েছে।’’ রাজ্যে শিল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন ওই বামনেতা। তিনি বলেন, ‘‘উনি শিল্প দেখলেই তাড়িয়ে দেন। সিঙ্গুরের কারখানা বুলডোজারে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন। সেখানে শিল্প তো দূর, একটা সরষে গাছও হয়নি। শিল্প না হলে কর্মসংস্থান হবে কী করে, তা ভাবেন না মুখ্যমন্ত্রী।’’ মোদীকে বিঁধে সূর্যকান্ত বলেন, ‘‘ভারতে নানা ধর্ম, ভাষার মানুষের বাস। সেই ফুলের বাগিচায় আপনাকে আগুন জ্বালাতে দেব না।’’ সভায় উপস্থিত ছিলেন বীরভূম ও বোলপুরের বামপ্রার্থী রেজাউল করিম, রামচন্দ্র ডোম, জেলা সিপিএম সম্পাদক মনসা হাঁসদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy