জলের দাবিতে হুঁশিয়ারি। সিউড়িতে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
কয়েক দিন আগেই জলের দাবিতে পড়েছিল পোস্টার। এ বার সশরীরে এসে পুরপ্রধানের কাছে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে গেলেন সিউড়ি ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। বাসিন্দা অর্থে ওই ওয়ার্ডের প্রমীলা বাহিনী। জল সঙ্কটের কারণে কত যে সমস্যায় পড়তে হয়, তা ওঁদের কথার ঝাঁঝ থেকেই স্পষ্ট। যদিও জল সমস্যার জন্য পুর কারিগরি দফতরকে দোষারোপ করেছেন পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।
সিউড়ি পুরসভা এলাকায় প্রচারে গিয়ে জলের এই সমস্যা নিয়েই ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন শতাব্দী রায়। সে বারও সিউড়ি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রমীলা বাহিনী ওঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ ছিল, ‘‘এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই জলের সমস্যা। পুরসভাকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। গত ভোটে শতাব্দী রায় বলেছিলেন জল সঙ্কট মিটে যাবে। কিন্তু, কোথায় কি? তাই ওঁর কাছে গিয়েছিলাম।’’ তার কিছু দিনের মাথায় সিউড়ি ২ নম্বর ওয়ার্ডের সমন্বয়পল্লিতে ‘জল নেই, ভোট নেই’ বলে পোস্টার পড়ে।
তার পরেও কাজের কাজ না হওয়ায় এ দিন দুপুরে ওই ওয়ার্ডের প্রমীলা বাহিনী সশরীরে পুরসভায় এসে বিক্ষোভ দেখান। পুরপ্রধানকে সমস্যার কথা জানান। বিক্ষোভের মূল স্লোগান ছিল ‘জল নেই, ভোট নেই’। এলাকার মহিলাদের অভিযোগ, ‘‘কল আছে, কিন্তু জল নেই। পানীয় জলের জন্য যেতে হয় পাশের পাড়ায়। পুরসভা, কাউন্সিলর, সবাইকে জানিয়েও সমাধান হয়নি। ভোট এলে এলাকায় পাইপলাইন বসানোর জন্য মাটি কাটা হয়। ভোট পেরোলেই সব শেষ।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় ৫০০ পরিবার ওই এলাকায় বসবাস করে। বেশ কিছু নলকূপও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু, সেগুলির অধিকাংশই খারাপ। আর যেগুলি ঠিক আছে সেগুলির জল ব্যবহারযোগ্য নয় বলে তাঁদের দাবি। পুরসভার ট্যাপকলেও জল আসে না। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রণতি চট্টোপাধ্যায়, মিনা চট্টোপাধ্যায়, দীপা মণ্ডলের কথায়, ‘‘ফাল্গুন মাস এলেই কুয়োর জল শুকিয়ে যায়। তেষ্টার জলের জন্য পাশের পাড়ায় যেতে হয়। প্রতি বছর ভোটের আগে এসে বলা হয় জল দেব। তার পরে পাঁচ বছর কেটে যায়। এ বার জল না পেলে ভোটও দেব না।’’
গত পুরভোটে তৃণমূল পরিচালিত সিউড়ি পুরসভার বিরুদ্ধে জল সমস্যা ছিল বিরোধীদের মূল অস্ত্র। তার পরে প্রায় চার বছর কেটে গেলেও সিউড়ির বেশ কিছু এলাকায় জলের সমস্যা এখনও অব্যাহত। পুরসভা সূত্রের খবর, আগের জল প্রকল্পকে সম্প্রসারিত করার জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু, জলের সমস্যা দূর হয়নি। তৃণমূল পুনরায় জিতে পুরবোর্ড গড়ে শহরে জলকষ্ট দূরীকরণের জন্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। কাজের দায়িত্ব পায় পুর কারিগরি দফতর। প্রকল্পের কাজ শেষও হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। কিন্তু, জলের কষ্ট মেটেনি। পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় এ জন্য পুর কারিগরি দফতরকে দোষারোপ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এর সম্পূর্ণ দায় পুর কারিগরি দফতরের। এত টাকা খরচের পরেও ওদের গাফিলতির জন্য এই সমস্যা হচ্ছে। তবে ২ নম্বর ওয়ার্ডে আপাতত জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy