Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিবাদে অবরোধ তৃণমূলের

বুধবার সকাল প্রায় ১০টা নাগাদ বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ও বড়জোড়া দুর্লভপুর শিল্প করিডোরের সংযোগস্থল গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুর মোড়ে অবরোধ শুরু হয়।

সাক্ষী: বিদ্যাসাগরের ছবি নিয়ে দুর্লভপুর মোড়ে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

সাক্ষী: বিদ্যাসাগরের ছবি নিয়ে দুর্লভপুর মোড়ে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

জাতীয় সড়ক ও শিল্প করিডোরের সংযোগস্থল তেমাথা মোড়ে রাস্তার মাঝে জ্বলছে টায়ার। পিছনে সবুজ চেয়ারে রাখা বিদ্যাসাগরের ছবি। ঝাঁ ঝাঁ রোদে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে বহু যাত্রীবাহী বাস ও বাণিজ্যিক গাড়ি। মঙ্গলবার কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এই পন্থাই বেছে নিয়েছিল তৃণমূল। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।

বুধবার সকাল প্রায় ১০টা নাগাদ বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ও বড়জোড়া দুর্লভপুর শিল্প করিডোরের সংযোগস্থল গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুর মোড়ে অবরোধ শুরু হয়। নেতৃত্বে ছিলেন লটিয়াবনী অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি জীতেন গরাই। একে তীব্র গরম। তার উপরে টায়ার পোড়ার গন্ধ। সঙ্গে শ্বাসরোধকারী কালো ধোঁয়া। এই পরিস্থিতিতেই প্রায় আধ ঘন্টা তাঁদের রাস্তার উপর বিভিন্ন গাড়িতে আটকে থাকতে বলে দাবি যাত্রীদের। পরে তৃণমূল নেতারা অবরোধ তুলে নেন।

গঙ্গাজলঘাটি থেকে রানিগঞ্জ যাওয়ার পথে তৃণমূলের বিক্ষোভে আটকে গিয়েছিল একটি বাস। বাসের এক যাত্রী বলেন, “টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ কেন? এ-তে তো পরিবেশ দূষণ হয়। মানুষকে কষ্ট দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো হল না।’’ বুধবার বিকেলে ধিক্কার মিছিল করল বেলুট রসুলপুর আঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস। আন্দরা কালী তলা থেকে গড়েরডাঙ্গা চৌমাথা হয়ে বেলুট বাজারে এসে শেষ হয় মিছিল।

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার নিন্দায় সরব হলেও য়াত্রীরা সাসকদলের প্রতিবাদের পন্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, যে তাণ্ডব হয়েছে তার নিন্দা করা প্রয়োজন। কিন্তু তার জন্য পথ অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেওয়া কেন? জীতেনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, আধ ধণ্টা নয়, পথ অবরোধ হয়েছিল পনেরো মিনিট। তাঁর কথায়, “বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙা আমরা মেনে নেব না। তাই সর্বস্তরেই আমরা প্রতিবাদ করছি।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “বিজেপিকে ফাঁসাতে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে নিজেরাই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তুলে তাণ্ডব চালিয়েছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। এ বার মূর্তি ভেঙে বিজেপির উপরে দোষ চাপাতে চাইছে। রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছেন।”

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে বড়জোড়ায় দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল করেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। বড়জোড়া চৌমাথা মোড়ে সভাও হয়। দলের জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী বলেন, “বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে তৃণমূল ও বিজেপি যে নক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, রাজ্যের মানুষ তা ক্ষমা করবেন না।” ওই ঘটচনার প্রতিবাদে এ দিন বাঁকুড়া শহর ও বেলিয়াতোড়েও মিছিল করে সিপিএম। বাঁকুড়া শহর, শালতোড়া, ছাতনা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ সভা করেএসইউসি। বাঁকুড়ার নিদর্শন সাহিত্য পত্রিকার তরফে এ দিন বাঁকুড়ার পাটপুর এলাকায় বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তির সামনে সভা করে ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া শহরের বহু বিশিষ্টজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE