দলের বাঁকুড়া জেলা দফতরে তৃণমূলের প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র
ক’দিন আগেই কর্মিসভায় দলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে এক জেলা শীর্ষ নেতার ক্ষোভ উগরে দেওয়ার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল। যা নিয়ে ভোটের মুখে মূলত বাঁকুড়া শহরের তৃণমূল নেতাদের ‘দ্বন্দ্ব’ ফের একবার প্রকাশ্যে এসে যায়। তারপর থেকেই রাজনৈতিক মহলের নজর ছিল, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় কী ভাবে প্রচারে নামেন। শনিবার দ্বিতীয় দফায় বাঁকুড়ায় এসে প্রথম দিন থেকেই দলের ক্ষত মেটাতে উঠে পড়ে লেগে পড়লেন পোড়খাওয়া নেতা সুব্রতবাবু।
বিকেলে জেলায় ঢুকেই বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল দফতরে দলের সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধি ও শাখা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন সুব্রতবাবু। দল সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বাঁকুড়া পুরসভার দলীয় কাউন্সিলরদের সরাসরি সুব্রতবাবুর তরফে ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এক তৃণমূল কাউন্সিলর বলেই ফেলেন, “সুব্রতবাবুর তরফে সরাসরি ফোন পেয়ে প্রথমে কিছুটা চমকে গিয়েছিলাম। ফোনে বারবার বলা হয় ‘দাদা’ নিজে এই বৈঠক ডেকেছেন। তাই আমাকে উপস্থিত থাকতেই হবে।” তিনি জানান, সুব্রতবাবুর মতো এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তির তরফে ওই ফোন পেয়ে না গিয়ে উপায় নেই। তবে, পুরো ঘটনাটিকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর কৌশল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এক জেলা তৃণমূল নেতা বলেন, “বামবিরোধী দলে নেতায় নেতায় দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। এই সব পথ পেরিয়েই সুব্রতবাবু একের পর এক ভোট পার করেছেন। তাঁর কাছে বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতাদের এককাট্টা করা মামুলি বিষয়।’’
সুব্রতবাবু নিজেও বলেন, “দক্ষিণপন্থী দলে এমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আমি অনেক দেখেছি। ভোটে এ সব প্রভাব ফেলে না। ভোটের বাদ্যিতে কাঠি পড়লেই মনোমালিন্য ভুলে সবাই এক জোট হয়ে যান।”
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে বিজেপির প্রভাব দেখা গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত বাঁকুড়া কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি। অন্যদিকে, সিপিএম প্রার্থী করেছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রকে। অমিয়বাবুও পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ হিসেবেই রাজ্যে পরিচিত। ফলে এই কেন্দ্রে ভোটের লড়াই এ বার এক অন্য মাত্র পেয়েছে বলেই অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
সুব্রতবাবুর কটাক্ষ, “বিজেপি হয়ত অপেক্ষা করছে আমাদের দল থেকে আবার কেউ বেরিয়ে যায় কি না তাঁর জন্য। সিপিএমের কে প্রার্থী হল, সেটা বড় বিষয় নয়।’’ অমিয়বাবুর পাল্টা দাবি, “তৃণমূল দলটা ব্যক্তিকেন্দ্রীক। তারা রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিশ্বাসী হলে পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের মনোনয়ন আটকাতে ব্লক বা মহকুমাশাসকের অফিস ঘেরাও করত না।’’ সুব্রতবাবু তা মানেননি। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম যা করেছে, তাতে ওদের মুখে ও সব কথা মানায় না।’’ বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “সুব্রতবাবু বরং নিজের দলের দ্বন্দ্ব মেটানোর মন দিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy