শব্দ-দানব: সরস্বতী পুজো মণ্ডপের বাইরে সাজানো ডিজে বক্স। ভাঁড়শালাপাড়ায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
আজ শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার চব্বিশ ঘণ্টা আগেও রামপুরহাট শহরে ডিজে বক্স-এর আওয়াজে নাজেহাল হল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ১০০, ২০০ মিটার দূরের সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ থেকে মাধ্যমিকের আগের বিকেলে ডিজে বক্স-এর আওয়াজে পড়াশোনা মাথায় ওঠে অনেকের। শুধু পরীক্ষার্থী নয়, কান-ফাটানো আওয়াজে দায় হয়েছে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপনও।
সোমবার সকালে রামপুরহাট শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেল, শহরের ধূলাডাঙা রোড, ভাঁড়শালাপাড়া, মহাজনপট্টি, প্রণবপল্লি, ১৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু পুজো মণ্ডপ থেকে ডিজে বক্স একনাগাড়ে বেজেই চলেছে।
বহু অভিভাবকেরই ক্ষোভ, ধূলাডাঙা রোড সহ শহরের প্রধান প্রধান রাস্তায় পুলিশের গাড়ি সব সময় যাতায়াত করছে। পুলিশ কর্মী থেকে পুলিশের আধিকারিকরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন নাগাড়ে ডিজে বক্স বেজে চলেছে। অথচ, তা বন্ধ করার ব্যাপারে পুলিশের কোনও ভূমিকা দেখা যায়নি।
এ দিন সন্ধ্যায় একই অভিযোগ ওঠে ইলামবাজারেও। পরীক্ষার্থীদের একাংশের অভিযোগ, রাত পর্যন্ত একটি ক্লাবে পুজো উপলক্ষ্যে মাইক বাজিয়ে চলে বাউল গানের অনুষ্ঠান।
অনেকেই এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে ফোন করে অভিযোগ জানানোর রাস্তাতেও যেতে চাননি। এঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘কী হবে এই ভেবে অনেকেই পুলিশের হয়রানি ছাড়াও বক্স বন্ধ করতে গিয়ে পাড়ার লোকের কাছে খারাপ নজরে পড়তে চাননি।’’ এক বাসিন্দার অভিযোগ, কিছু এলাকায় ইলেকট্রিক তারের কভার তার কেটে, ইলেকট্রিক খুঁটির বক্স খুলে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ডিজে মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে রাত পর্যন্ত বাজানো হয়েছে। গ্রামেও নিষেধ না মেনেই বেজেছে ডিজে। নলহাটি থানার কুরুমগ্রাম হাইস্কুলে মাধ্যমিকের সেন্টার পড়ে। সেখানে সরস্বতী পুজোর সময় মেলা বসে। পনেরো দিন ধরে সেই মেলা চলে। এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য
স্কুলের সামনে বা আশপাশ এলাকায় মেলা বসেনি। কিন্তু, পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ১০০ মিটার ২০০ মিটার দূরত্বে মাইক বা সাউন্ড বক্স-এর আওয়াজ শুনতে পাওয়া গিয়েছে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার জেলা কনভেনর প্রলয় নায়েক বলেন, ‘‘বিষয়টি পুলিশ, প্রশাসনের। এ ব্যাপারে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তারাই নেবে।’’ অভিযোগ পাননি, সে কথা জানিয়ে রামপুরহাট মহকুমাশাসক নাভেদ আখতার বলেন, ‘‘সোমবার দুপুরেও শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোনও অভিযোগ মেলেনি।’’ কোথাও ডিজে বাজলে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিষয়টি গুরুতর, তাই ব্যবস্থা নেওয়া হবেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy