পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছাবার্তা পুলিশের। দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র
রাস্তায় আসতে কোনও কষ্ট হয়নি তো? যানচলাচল নিয়ে কোনও অভিযোগ? গ্রামে কি কোনও সমস্যা আছে? স্কুলে যাওয়ার সময় মেয়েদের কেউ কি বিরক্ত করে? একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়েই পুলিশ কর্তা যোগ করলেন, ‘‘এমনটা হলে সঙ্গে সঙ্গে জানান। ফোন নম্বরটাও রাখুন।’’
মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ইতিউতি ছড়িয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবককূল। তাঁদের সঙ্গে এ ভাবেই নানা প্রশ্নে আলাপ সারলেন দুবরাজপুরের ওসি শেখ মহম্মদ আলি। জনসংযোগ বাড়াতে দুবরাজপুর সারদেশ্বরী বিদ্যামন্দির ফর গার্লস স্কুলের সামনে এমনই দৃশ্য দেখা গেল সোমবার। মাধ্যমিকের প্রথম দিনে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে জীবনের প্রথম পরীক্ষায় ব্যস্ত সন্তানেরা। কেমন পরীক্ষা দিচ্ছে সন্তান, সেই উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষায় অভিভাবকেরা। এটা চেনা ছবি। সেই ছবিটা কিছুটা বদলে জনসংযোগ বাড়ানোর কাজে লাগানো যায় সেটাই দেখালো দুবরাজপুর থানা। দুবরাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রম পরিচালিত শহরের মধ্যে মেয়েদের ওই স্কুলে প্রতিবারের মতো এ বারও মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুরভী বক্সী বলছেন, ‘‘শহর ও আশপাশের পাঁচটি স্কুল থেকে ৫৫৫ জন ছাত্রী এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে।’’
পরীক্ষাকেন্দ্র যেহেতু দূরে নয়, তাই পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে পরীক্ষা শুরুর পরই বেশির ভাগ অভিভাবক বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। তবু বেশ কিছু অভিভাবক ও পরিজনেরা পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। সেই তালিকায় ছিলেন ইলামবাজরের আল আমিন মিশনের ২৫ জন পরীক্ষার্থীর (দুবরাজপুরের একটি স্কুলের হয়ে যারা পরীক্ষা দিচ্ছে) অভিভাবকেরা। গাছতলায় বেশ কিছু চেয়ার পেতে, পানীয় জলের ব্যবস্থা করে তাঁদেরই ডেকে নিলেন ওসি। আসুন একটু আলাপ করি। ওসি বললেন, ‘‘পরিষেবা দেওয়াই আমাদের কাজ। আপনারা যে এলাকারই হন, সেখানে কোনও সমস্যা থাকলে আমায় বলতে পারেন। ভবিষ্যতে কোনও ঘটনা বা অসুবিধায় পড়লে আমায় জানাতে পারেন। সেটা যদি আমার থানা এলাকার নাও হয় বা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত নাও হয়, খবর পেলে সাহায্য করতে পারি।’’
কথা বলতে বলতে উঠে এল, এলাকায় মাদক কারবারের রমরমা, ইভটিজিং, মোবাইল কানে গাড়ি চালানো, এমনকি জলসঙ্কট সহ নানা প্রসঙ্গ। দুবরাজপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে সকলকেই আশ্বস্থ করা হল। পুলিশ বলছে, পরীক্ষা চলাকালীন থানা এলাকায় বেশ কয়েক’টি কেন্দ্রের বাইরে এমন ভাবে অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ জমাবে পুলিশ। তাতে কিছু এলাকার সমস্যা বা কোনও সমস্যার সমাধানসূত্র উঠে আসতে পারে। বেশ কিছু মানুষের কাছে ফোন নম্বর পৌঁছনো গেলেও কিছু ঘটনার আগাম আঁচ পাওয়া যেতে পারে। অভিভাবক সইদুর রহমান, রহুল আহম্মেদ, কেনিজ রাসেদরা বলছেন, ‘‘সবার কাছে তো আর পুলিশ অফিসারদের নম্বর থাকে না। নম্বরটা তাই ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। ভাবনাও বেশ ভাল।’’
‘‘তবে জনসংযোগের মাঝে পরীক্ষাকেন্দ্রের উপরও সজাগ নজর ছিল পুলিশের’’—বলছেন সারদেশ্বরী বিদ্যামন্দির ফর গার্লসের শিক্ষিকারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy