উচ্ছ্বসিত: মুখ্যমন্ত্রীর সভায় সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ পেতে হাজির বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রীরা। বুধবার রামপুরহাটের সানঘাটা সেতুর কাছে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
প্রশাসনিক সভায় জেলার উন্নয়ন নিয়ে বক্তব্যে নিজের ছোটবেলার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলায় মামাবাড়িতে আসতাম। ক্লাস ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত পরীক্ষার পরে ১ মাস করে গ্রামে এসে থাকতাম। দেখতাম এক হাঁটু করে গর্ত। সাইকেলরিকশা করে যেতাম। কী হাল ছিল রাস্তার! এখন কত ভাল হয়ে গিয়েছে। ঢেলে উন্নয়ন হয়েছে। অনেক জায়গায় পাকা রাস্তা হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার রামপুরহাটের প্রশাসনিক সভায় তাঁর আমলে জেলায় একের পরে এক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, তৃণমূল সরকারের আমলে তারাপীঠ ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তৈরি করা হয়েছে। সে জন্যে দেওয়া হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। স্বাগত তোরণ থেকে পানীয় জল, তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ, রামপুরহাট-সিউড়ি-বোলপুরে সুপারস্টেশ্যালিটি হাসপাতাল, বিশ্ববাংলা ঘাট, ব্রহ্মতারা শ্মশান তৈরি করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্যে বিরোধীদেরও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার কথায়, ‘‘রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তারাপীঠ স্টেশন তারাপীঠ মন্দিরের আদলে তৈরি করেছিলাম। লক্ষ লক্ষ মানুষ তারাপীঠ, বক্রেশ্বর, বোলপুরে আসেন। কেউ কখনও এই জায়গার উন্নয়ন করেনি।’’ আজ, বৃহস্পতিবার তিনি তারাপীঠ মন্দিরে যাবেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
এ দিনের সভা থেকে ১০ হাজার মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কয়েক দিন আগে জয়দেব মেলায় ১২ হাজার মানুষের কাছে এ ভাবেই সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় ৩০ লক্ষ বাড়ি তৈরি করে দিয়েছি গরিব মানুষকে। ৯০ শতাংশ শৌচাগারও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, রাজ্য সরকার জেলার উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে। একের পরে এক সেতু, আবাসন, পলিটেকনিক কলেজ, আইটিআই তরৈ করা হয়েছে। সাজানো হয়েছে বিভিন্ন তীর্থস্থান। তিনি বলেন, ‘‘এ ছাড়াও আমি পৌঁছলে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লোকশিল্প হোক, কন্যাশ্রী হোক, যুবশ্রী হোক— সব কিছুই সুন্দর ভাবে করতে পারি।’’
এর আগে এ দিন সকালে রামপুরহাট সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে কুশুম্বা এলাকায় বুঙ্কেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে ফের সার্কিট হাউসে চলে যান। বেলা ১টা ৩৫ নাগাদ পৌঁছন রামপুরহাটের সানঘাটা সেতু সংলগ্ন সভামঞ্চে। কয়েক জন উপভোক্তার হাতে কৃষকবন্ধু, সবুজশ্রী, সবুজসাথী, কন্যাশ্রীর মতো সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেন। ৮৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন, ৬৭টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এ দিন সভার পরেই তিনি কুশুম্বায় ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভার জেরে এ দিন রানিগঞ্জ মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট ছড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সভা শেষ হওয়ার ঘণ্টাতিনেক পরেও যানচলাচল স্বাভাবিক হয়নি। পুলিশের হিসেবে এ দিনের সভায় প্রায় ১ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। তবে দলের দাবি, সভায় প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ ভিড় জমান। বেলা ১১টার পর থেকেই মানুষ সভায় আসতে থাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy