ব্যাটারি ময়দানে সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে ফসল, অভিযোগ উঠেছে রাজ্য জুড়েই। এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কী পরিকল্পনা করা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে পড়লেন পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের কর্তারা। মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী খরাপ্রবণ এলাকার জন্য উপযুক্ত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে সক্রিয় হওয়ারও নির্দেশ দেন।
এ দিনের বৈঠকে মুখ্য সচিব মলয় দে এ বার বৃষ্টি কম হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে পানীয় জল ও সেচের ব্যবস্থা নিয়ে জেলা প্রশাসনের কী ভাবনা রয়েছে, তা জানতে চান। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় জানান, বিকল্প চাষে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ডালশস্য ও তৈলবীজ চাষ হবে। বীজ বিলি করা হয়ে গিয়েছে। ২০ হাজার নলকূপ করবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কম বৃষ্টির জেরে চাষে ক্ষতির কথা মেনে নিয়ে জেলাশাসক বলেন, ‘‘বছরে গড়ে জেলায় ৮-৯ লক্ষ টন ধান উৎপাদন হয়। গত বার ভাল বৃষ্টি ছিল, ১১ লক্ষ টন হয়েছিল। এ বার এতটা হবে না। গত বারের থেকে দু’লক্ষ টন কম হবে বলে মনে করা যাচ্ছে।’’
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী জলের বন্দোবস্তের ব্যাপারে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। যেখানে ধান হবে না, সেখানকার চাষিদের জন্য কী করা হবে, তা জানতে চান। মমতা বলেন, ‘‘এ বছর খরার একটা প্রবণতা আছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, কিছুটা বীরভূম, বর্ধমান, ঝাড়গ্রামে। এটা মোকাবিলার জন্য এখন থেকে ভবিষ্যতের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ করা দরকার।’’
পুরুলিয়ার জেলাশাসক জানান, খরাপ্রবণ এলাকায় জল সংরক্ষণে ‘উষরমুক্তি’ প্রকল্পের কাজ চলছে। একশো দিনের কাজে যে প্রকল্প রয়েছে তার ৭০ শতাংশই উষরমুক্তির বলে দাবি করেন তিনি। আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এলাকার লোকজনকে একশো দিনে বেশি যুক্ত করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক অবশ্য জানান, অনেকে একশো দিনের কাজের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া জানেন না। সরকারি কর্মী-আধিকারিকদের কাছ থেকে সেই আবেদন জমা নিয়ে পনেরো দিনের মধ্যে কাজ দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, জাপানি ঋণে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় যে জলপ্রকল্প হচ্ছে, তা তৈরি হতে ২০২২ সাল হয়ে যাবে। তার আগে পুরলিয়ায় কী বন্দোবস্ত হবে, সেই প্রশ্ন ওঠে বৈঠকে। জেলাশাসক জানান, খাল মজে যাওয়ায় এখন সেচে সমস্যা হচ্ছে।
তবে সেচ দফতর রাজ্যের জন্য একটি বড় প্রকল্প নিয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তারা জানান। নবান্নের এক কর্তা জানান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরুলিয়ায় সব প্রকল্পে কাজ হচ্ছে। কিছু শেষও হয়ে গিয়েছে।’’ ৩৬ হাজার একর জমিতে চাষের ব্যবস্থা করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে, জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy