Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
স্বামী চোর নন, দাবি স্ত্রীর

পিটিয়ে খুনের মামলা দায়ের

নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, বুধবার সকালে দূরে বিশেষ কাজে যাচ্ছেন বলে গৌরীশঙ্কর বাড়ি থেকে বের হন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু সাবির আনসারি। কিন্তু, স্বামীর কাছে ফোন না থাকায়, রাতে কেন ফেরেননি জানতে পারেননি।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ঝালদা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

চোর অপবাদ দিয়ে তাঁর স্বামীকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে কোটশিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন উপরজাবর গ্রামে নিহত গৌরীশঙ্কর কুমারের (৩৫) স্ত্রী দিবাঙ্গনা কুমার মাহাতো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ ওই বধূ কোটশিলা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।

নিহতের স্ত্রী দাবি করেন, বুধবার সকালে দূরে বিশেষ কাজে যাচ্ছেন বলে গৌরীশঙ্কর বাড়ি থেকে বের হন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু সাবির আনসারি। কিন্তু, স্বামীর কাছে ফোন না থাকায়, রাতে কেন ফেরেননি জানতে পারেননি। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামের লোকজনের কাছেই খবর পান, তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁর দেহ রয়েছে।

এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ বলেন, ‘‘নিহতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিক্তিতে আমরা খুনের মামলা রুজু করে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’’ এ দিকে ওই ঘটনার পর থেকেই জাবর গ্রামের অনেকে এলাকা থেকে পালিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পুরো ঘটনার উপরে নজর রাখা হয়েছে।

বুধবার রাতে পুলিশ কোনও সূত্র থেকে খবর পায়, কোটশিলা থানা এলাকার মাঝিডি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপর জাবরের জঙ্গলে দু’জন যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাতেই পুলিশ সেখানে গিয়ে উদ্ধার করে কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে গৌরীশঙ্করকে মৃত বলে জানায় হাসপাতাল। তাঁর বাড়ি কোটশিলা থানারই বড়রোলা গ্রামে। আহত বছর বত্রিশের সাবির আনসারি ঝাড়খণ্ডের জরিডি থানার আরাজু গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, চোর সন্দেহেই গণপিটুনির শিকার ওই দুই যুবক। ওই এলাকা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরে গবাদি পশু চুরি যাচ্ছিল। তাই চোরকে একেবারে হাতেনাতে ধরতে তক্কে তক্কে ছিলেন তাঁরা।

বুধবার রাতে কয়েকজন গ্রামবাসী দেখতে পান, জঙ্গলে কয়েকটি গবাদি পশু দড়ি দিয়ে গাছে বাঁধা রয়েছে। খবর পৌঁছয় গ্রামে। কয়েকজন জঙ্গলের বিভিন্ন দিকে লুকিয়ে থাকেন। তাঁদের দাবি, রাতে ওই দুই যুবক গবাদি পশুগুলিকে দড়ি থেকে খুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ওঁত পেতে থাকা কয়েকজন তাঁদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। শুরু হয় বেদম মারধর। দু’জনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

যদিও নিহতের স্ত্রী দিবাঙ্গনা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে তাঁদের সংসার। সামান্য জমিতে তাঁর স্বামী চাষাবাদ করে ও বিড়ি বেঁধে সংসার চালাতেন। চুরি করতে যাবেন কেন? ওই গ্রামের লোকেরা মিথ্যা অভিযোগে স্বামীকে খুন করেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death Lynching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE