Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শ্বশুরকে গলা টিপে খুনের অভিযোগ 

রাজু নেশার টাকা জোগাতে বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র বিক্রি করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে রাজুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর প্রায় রোজই অশান্তি বাধত। 

অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রতীকী চিত্র

অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুরারই শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩০
Share: Save:

মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি চলছিল। বাধা দিয়েছিলেন বৃদ্ধ শ্বশুর। সেই আক্রোশে তাঁকে খুন করার অভিযোগ উঠল জামাইয়ের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পাইকর থানার কলহপুর গ্রামে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম সায়েদ শেখ (৬৮)। এখনও পরিবাবের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এলাকা সূত্রে জানা যায়, ১৮ বছর আগে কলহপুরের অনেমা বিবির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বাসিন্দা রাজু শেখের। বিয়ের কিছুদিন পরেই রাজু শ্বশুরবাড়ি এসে সেখানেই থাকতে শুরু করেন। শ্বশুর সায়েদ শেখ তাঁর বাড়ির পাশে জামাইকে ঘর তৈরি করে দেন। পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজু মদ খাওয়া শুরু করলে তা ঘিরে বাড়িতে অশান্তি শুরু হয়। অশান্তির ফলে গ্রামে তিন বার সালিশি সভাও বসে। সালিশি সভায় রাজুকে মদ ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু রাজু নেশার টাকা জোগাতে বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র বিক্রি করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে রাজুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর প্রায় রোজই অশান্তি বাধত।

অনেমা বিবি বলেন, ‘‘বিয়ের তিন বছর পর থেকেই স্বামী আমার উপরে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার শুরু করে। অতিরিক্ত মদ খাওয়ার জন্য বাড়ির সব জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছে। কিছুদিন আগে গ্রামের এক ব্যক্তির কাছে হাজার টাকা ধার করেছিল। শোধ করতে না পারায় বাড়ির একটা খাটও তাকে দিয়ে দেয়। এই নিয়ে সোমবার রাতে স্বামীর সঙ্গে অশান্তি হচ্ছিল।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজুকে তখন তাঁর বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে রাজু তাঁর গলা টিপে ধরেন। সায়েদকে কিছুতেই রাজুর হাত থেকে ছাড়ানো যাচ্ছিল না। পরে উদ্ধার করা হলেও তিনি অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন। মুরারই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে পাইকর থানার পুলিশ এসে রাজুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের পরে মঙ্গলবার মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনেমা এ দিন বলেন, ‘‘আমার স্বামীর উপযুক্ত শ্বাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ কলহপুর গ্রামের বাসিন্দা, মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মদন ঘোষ বলেন, ‘‘রাজু প্রচুর মদ খেত। অনেক বার মদ ছেড়ে দিতে বকেছিলাম। কিন্তু কথা শোনেনি। কোনও কাজ করত না বলে নেশার টাকার জন্য বাড়িতে অত্যাচার করত। সোমবার আমাদের সামনে এসে তাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরেছে বলে চলে যায়। পরে জানতে পারি শ্বশুরকে মেরে ফেলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Criminal offence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE