Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
আজ কলকাতায় বৈঠক
Purulia Zilla Parishad

স্থায়ী সমিতি গঠনের জট খুলতে ডাক

— ফাইল চিত্র

— ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪০
Share: Save:

পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পুরুলিয়া জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষ ও স্থায়ী সমিতি গড়া হয়নি। তা নিয়ে জেলা পরিষদের ক্ষমতায় থাকা তৃণমূলের ঘরে-বাইরে কম সমালোচনা হচ্ছে না। জট কাটিয়ে ন’টি স্থায়ী সমিতি ও কর্মাধ্যক্ষ যাতে দ্রুত ঠিক করা যায়, সে জন্য আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতায় জেলা পরিষদের সমস্ত তৃণমূল সদস্যদের ডেকে পাঠিয়েছেন নেতৃত্ব। দল সূত্রের খবর, সেখানে তাঁদের সঙ্গে দলের তরফে পুরুলিয়ার দুই পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের দুই মন্ত্রী—মলয় ঘটক ও শুভেন্দু অধিকারী আলোচনায় বসবেন।

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠন করা-সহ নানা বিষয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতায় আলোচনা করা হবে। সে জন্য দলের জেলা পরিষদ সদস্যদের ডাকা হয়েছে।’’

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের মোট ৩৮টি আসনের মধ্যে বর্তমানে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা ২৮। বিজেপির সাত ও কংগ্রেসের তিন জন সদস্য রয়েছেন। গত বছরের অগস্ট মাসে জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে শপথ নিয়েছেন সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সহ-সভাধিপতি ও জেলা পরিষদে দলনেতাও নির্বাচন হয়। সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেলেও কেন এত দিন ন’জন কর্মাধ্যক্ষ ও ন’টি স্থায়ী সমিতি গঠন করা হয়নি?

নেতৃত্বের বক্তব্য, বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের বিষয়টি আদালতে ঝুলে থাকাতেই এত দিন জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলি গড়া যায়নি। আদালতের নির্দেশে, জুলাইয়ের গোড়ায় বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলি গড়ার ব্যাপারে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ছাড়পত্রও মিলেছে। তার পরেও থমকে রয়েছে স্থায়ী সমিতি গঠনের কাজ। এর জেরে যে জেলার উন্নয়নমূলক কিছু কাজ থমকে রয়েছে, তা মানছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশও। তা হলে কেন স্থায়ী সমিতি গড়া হচ্ছে না?

তৃণমূলের অন্দরের খবর, ন’জন কর্মাধ্যক্ষের মধ্যে ক্ষমতার দিক থেকে পূর্ত, কার্য ও পরিবহণ বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ। জেলার সড়ক নির্মাণ থেকে সংস্কার প্রভৃতি কাজে জেলা পরিষদের অর্থের অনেকখানি এই স্থায়ী সমিতির হাত ধরে খরচ হয়। ওই পদের জন্য অন্তত আট জন জেলা পরিষদ সদস্য দলের বিভিন্ন স্তরে তদ্বির শুরু করেছেন। সেই জটেই আটকে গিয়েছে বাকি কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন।

দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, দাবিদারদের মধ্যে যেমন গত জেলা পরিষদের কয়েকজন সদস্য রয়েছেন, তেমনই নব নির্বাচিতেরাও আছেন। কারও দাবি, তাঁর নাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে ভাবা হয়েছিল। দল তাঁর বদলে সুজয়বাবুকে সভাধিপতি করায় তিনি সেই নির্দেশ মাথা পেতে নিয়েছেন। সেই কারণে তিনি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দাবিদার। আবার এমন কয়েকজন রয়েছেন, তাঁরা দাবি করছেন, দলের দুর্দিনে বামফ্রন্টের অত্যাচার সহ্য করেছেন, কাজেই এ বার তাঁদেরই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ করতে হবে।

আবার কারও যুক্তি, দায়িত্ব বণ্টনের প্রশ্নে মাপকাঠি হোক দল পরিচালনার যোগ্যতা। আবার এক পক্ষ চাইছেন, অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের সংমিশ্রণে জেলা পরিষদের ন’টি স্থায়ী সমিতি গড়া হোক। সদস্যের ওই অংশের অনড় মনোভাবেই শেষমেশ বল গিয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের কোর্টে। সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আশা করি, শীঘ্রই স্থায়ী সমিতি গঠন ও কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হয়ে যাবে।’’

কর্মাধ্যক্ষ ঠিক করা নিয়ে জটিলতা থাকলেও এত দিন স্থায়ী সমিতিগুলি গঠনের ব্যাপারে জেলা নেতৃত্ব কেন আলোচনা করেনি, তা নিয়ে সদস্যদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তাঁদের যুক্তি, প্রতি স্থায়ী সমিতিতে পাঁচ সদস্য থাকেন। স্থায়ী সমিতি গঠন করার পরে, তাঁদের মধ্যে থেকে এক জন কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। এতদিনে স্থায়ী সমিতিগুলি হয়ে গেলে কর্মাধ্যক্ষ গঠনের কাজ এগিয়ে থাকত।

জেলা পরিষদে তৃণমূলের দলনেতা হলধর মাহাতোর দাবি, ‘‘স্থায়ী সমিতি গঠন করা নিয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে সদস্যদের কোনও বৈঠক হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তা ছাড়া, এর সমাধান সূত্র জেলার বৈঠকে মিলবে না। এক মাত্র রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ দিলেই সবাই তা মানবে। সভাধিপতি নির্বাচনের সময়েও তাই হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia Zilla Parishad TMC Permanet committee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE