Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ঔরৈয়ায় মৃত হুড়ার ছেলে প্রকাশ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর আড়াই ধরে রাজস্থানের জয়পুরের একটি পাথরের কারখানায় কাজ করতেন প্রকাশ।

প্রকাশ কালিন্দী। নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ কালিন্দী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৩:৪৬
Share: Save:

সুদূর উত্তরপ্রদেশের ঔরৈয়ার হাসপাতালে মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয়েছে শনিবারের ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত পুরুলিয়ার প্রকাশ কালিন্দীর (২৫)। তাঁকে নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃত পুরুলিয়ার শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল সাত। মৃত্যু সংবাদ মঙ্গলবার হুড়ার জামবাদের বাড়িতে প্রকাশের বৃদ্ধা মা সনকা কালিন্দীকে দিতে গিয়েছিলেন পুপুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর আড়াই ধরে রাজস্থানের জয়পুরের একটি পাথরের কারখানায় কাজ করতেন প্রকাশ। লিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পড়শিরা তাঁদের বাধা দেন। তাঁরা দাবি করেছেন, অনেক বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন সনকাদেবী। দিনমজুরি করে একমাত্র ছেলেকে বড় করে তুলেছিলেন। সেই ছেলের মৃত্যুসংবাদ অন্তত এক দিন পরে তাঁকে দেওয়া হোক।

গত বার দুর্গাপুজোয় বাড়িতে এসেছিলেন। কালীপুজোর পরে ফিরে যান। ‘লকডাউন’-এ দীর্ঘদিন আটকে থাকার পরে, অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে তিনিও বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছিলেন। তবে পথে কী ভাবে বা কোন জায়গায় তিনি পটনাগামী ‘ওয়াল পুট্টি’ বোঝাই ওই ট্রাকে উঠেছিলেন, সে তথ্য কারও জানা নেই।

জামবাদ গ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত মাহাতো জানান, দুর্ঘটনার ঘণ্টাখানেক আগে প্রকাশের সঙ্গে তাঁর মায়ের ফোনে কথা হয়েছিল। তার পরদিন থেকে প্রকাশকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। পড়শিরা জানান, দুর্ঘটনার খবর জানার পরে, তাঁরা বারবার প্রকাশের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। দেবব্রতবাবু বলেন, “প্রত্যেক বারই ফোন বেজে যায়। প্রকাশের মা-ও একাধিক বার ফোন করেছিলেন। আমরা তাঁকে বলেছিলাম, প্রকাশ হয়তো লকডাউন-এ কোথাও আটকে পড়েছে। হয়ত কোথাও ওর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে।’’

পড়শিরা জানান, শনিবার বিকেলে প্রকাশের মোবাইল ফোন ধরে এক ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, দুর্ঘটনায় কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে প্রকাশ রয়েছেন কি না, প্রথমে তিনি তা জানাতে পারেনি। তবে পরে আহত শ্রমিকদের ছবি পাঠিয়েছিলেন। তখনই আহতদের মধ্যে মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় প্রকাশকে পড়শিরা চিনতে পারেন।

মৃত্যুর খবর আসার পরে হুড়া থানার কয়েকজন পুলিশকর্মীকে নিয়ে বিডিও (হুড়া) ধ্রুবাঙ্কুর ঠাকুর এ দিন প্রকাশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তবে প্রতিবেশীদের অনুরোধে তাঁরা সনকাদেবীকে আর মৃত্যুর খবর জানাননি। সনকাদেবী একাই থাকেন বাড়িতে। দেবব্রত মাহাতো, গোপাল গড়াই প্রমুখ বাসিন্দা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ করেন, বৃদ্ধার জন্য যেন একটি কাজের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রকাশের বাড়িতে গিয়েছিলেন হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো। তিনি বলেন, “ওই পরিবারের পাশে রয়েছি। বৃদ্ধা যাতে আর্থিক সহায়তা পান, সেই চেষ্টা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE