Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
MIgrant Workers

আর ভিন্ রাজ্যে কাজে নয়, এককাট্টা অনেকেই

কয়থা গ্রামের গোলেনুর বিবির মতো রাজ্যের বাইরে থেকে ঘরে ফেরা অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা বা পরিযায়ী শ্রমিকেরা আর বাইরে যেতে চাইছেন না।

ছবি পিটিআই

ছবি পিটিআই

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৬:০৩
Share: Save:

ইদের আগের দিনের সকাল। নলহাটি থানার কয়থা গ্রামের মিয়াপাড়ার বাসিন্দা গোলেনুর বিবির ছোট ছেলে নুর আলম প্রতিবার ইদের আগে বাড়ি ফেরেন। এ বার এখনও ছেলে ফিরতে পারেনি। পাড়ার, গ্রামের আরও অনেকে ফিরে এলেও ছেলে কেন এল না, এই ভেবে আধখানা হয়ে আছেন। ঠিক করে রেখেছেন ছেলে ফিরলে আর ওকে বাইরে পাঠাবেন না। বলছেন, ‘‘গ্রামে জন খেটে যা রোজগার হবে তাতেই শাক-নুন, ভাত খাবে। খুব হয়েছে আর নয়।’’

কয়থা গ্রামের গোলেনুর বিবির মতো রাজ্যের বাইরে থেকে ঘরে ফেরা অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের সদস্যরা বা পরিযায়ী শ্রমিকেরা আর বাইরে যেতে চাইছেন না। পাইকর থানার কাশিমনগর গ্রামের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের জামিরুল ইসলাম এখনও ভাল ভাবে পা ফেলতে পারেন না। গ্রামের তাঁতিদের তৈরি মশারি বিহারের পটনায় বিক্রি করতে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন। শেষমেষ সাত-আট জনের দলে রেললাইন ধরে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে হাঁটতে হাঁটতে শুরু করেছিলেন। পথে দলছুট হয়ে একাও হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘টানা ১২ দিন কী ভাবে যে পথ চলেছিলাম সেটা ভোলার না।’’

কাশিমনগর গ্রামের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা আজিরুল শেখ, উত্তরপাড়ার বাসিন্দা হাবিবুর শেখরা সাইকেলে বেনারস থেকে বাড়ি ফিরেছেন। কাশিমনগর, কয়থা, মহেশপুর, করমজি, রামপুর, ধানগড়া এই সমস্ত গ্রামের শ্রমিকরাও ইদের আগে বাড়ি ফিরেছেন। এঁদের একটাই কথা। যা কষ্ট সহ্য করেছি। আর নয়। এ বার গ্রামেই আয় করতে চাই। তা একশো দিনের কাজে মাটি কাটার কাজ হোক, বা রাজমিস্ত্রি, জোগাড়ে হোক। যে কাজ পাবেন, তাইই করবেন।

শ্রমিকদের কথা যে ঠিক তা মানছেন অনেকেই। কাশিমনগর গ্রামের বাসিন্দা, স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী মফিজুল শেখ জানালেন, গ্রামে প্রায় তিনশো শ্রমিক বাইরে থেকে এসেছেন। প্রায় সকলেই আর গ্রামের বাইরে যেতে চাইছেন না। এঁদের কাজ দেওয়ার জন্য বিডিও এবং পঞ্চায়েত স্তরে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Nalhati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE