জেলা সদরের পানীয় জলের সমস্যা মেটাবেন— পুরভোটের মুখে সিউড়িবাসীকে এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেই প্রতিশ্রুতি কার্যকর করার প্রথম ধাপের সূচনা হল শুক্রবার। প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি পৃথক জলপ্রকল্পের উদ্বোধন হল শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দত্তপুকুর এলাকায়। পরিকল্পনা রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে পুর কারিগরী দফতরের বীরভূম ডিভিশ। রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা দফতর ও পুর কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, এই প্রকল্প রূপায়িত হলে শেষপর্যন্ত সব ক’টি ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা মিটবে।
ঘটনা হল, সিউড়ি পুরভোটের আগে সব চেয়ে চর্চিত বিষয় ছিল শহরের জল সমস্যা। অভিযোগ, ঠিক করে জলপ্রকল্প রূপায়ণ না করায় শহরের অর্ধেকের বেশি ওয়ার্ডে পানীয় জল যথাযথ পৌঁছয় না। পুরবাসীর সঙ্গে একই দাবি তুলেছিলেন বিরোধীরাও। অভিযোগের কেন্দ্রে ছিলেন তৎকালীন তৃণমূল পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। এই অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে পুরপ্রধান ও বোর্ডের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক স্বপন ঘোষ। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরাল ছিল যে খোদ পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীকে লিফলেট বিলি করে জল সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। ভোটের ফলও শাসকদলের পক্ষেই ছিল। পুরসভার ১৯টির মধ্যে চারটে আসন বিরোধীরা পেলেও দল বদলের জেরে এখন কার্যত বিরোধী শূন্য সিউড়ি পুরসভা। অভিযোগের নিষ্পত্তি আদৌ হয়েছে কিনা, তা অবশ্য এখনও সামনে আসেনি। তবে বর্তমান পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় এবং উপপুরপ্রধান বিদ্যাসাগর সাউরা বলছেন, ‘‘সিউড়ি শহরে জলসমস্যা ছিলই। তা মেটাতেই পুরমন্ত্রী মোট ১২ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন। এ বার নিশ্চই সিউড়িবাসীর জল সমস্যা মিটবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে নরসিংহপুরের কাছে ময়ূরাক্ষী নদী থেকে তিনটি গভীর নলকূপের সাহায্য জল তোলা হবে। সেই জল আসেবে সিউড়ির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দত্তপুকুরের মাটির নীচে থাকা জলাধারে। যার ধারণ ক্ষমতা ২ লক্ষ লিটার। সেই জল পরিস্রুত করে পাম্পের সাহায্যে তোলা হবে কাছের একটি ওভারহেড জলাধারে। যার ধারণ ক্ষমতা ১২ লক্ষ লিটার (জেলার সব চেয়ে বেশি জলধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন জলাধার)। এমইডি জানাচ্ছে, প্রায় ৪০ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যেমে পুরসভার ৬, ৭,১০,১১,১২,১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করা হবে। পুর কারিগরী দফতরের বীরভূম ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জয়দেব মণ্ডল এবং সহকারি ইঞ্জিনিয়ার চিণ্ময় সিংহরা বলছেন, ‘‘প্রকল্পের জন্য ন’মাস বরাদ্দ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে আশা করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy