Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘নিখোঁজ’ বিজেপি কর্মী‌ পাকড়াও 

যোগী আদিত্যনাথের সভা থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বলরামপুরের কর্মা গ্রামের বিজেপি কর্মী কার্তিক গড়াই।

ধৃত: পুরুলিয়া আদালতে তোলার সময়ে কার্তিক। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: পুরুলিয়া আদালতে তোলার সময়ে কার্তিক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

যোগী আদিত্যনাথের সভা থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বলরামপুরের কর্মা গ্রামের বিজেপি কর্মী কার্তিক গড়াই। রবিবার কলকাতার একটি লজ থেকে তাকে ধরে আনল পুলিশ। ওই দিনই কার্তিকের বিরুদ্ধে বলরামপুরের এক জন প্রতারণার অভিযোগ রুজু করেছেন। পুলিশের দাবি, দেনার দায়ে অপহরণের নাটক ফেঁদেছিল ওই যুবক।

ঘাটবেড়া-কেরোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় পড়ে কর্মা গ্রাম। ছোট উরমা থেকে একটি রাস্তা চলে গিয়েছে গ্রামের দিকে। দল এবং পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই মোড়ে মোটরবাইক রেখে ৫ ফেব্রুয়ারি দলের অন্যদের সঙ্গে বাস ধরে সভায় গিয়েছিল কার্তিক। সভা ছিল পুরুলিয়া ২ ব্লকে, ভাঙরার নবকুঞ্জ ময়দানে। ফেরার পথে উরমায় নেমে মোটরবাইক নিয়ে যায় বলরামপুরে। সেখান থেকেই বাড়ি ফিরছিল।

বলরামপুরের স্টেশন পাড়ার বিজেপি কর্মী সুবীর ঘোষের দাবি, ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পরে তাঁর মোবাইলে কার্তিকের ফোন আসে। দাবি করে, দু’টি গাড়ি তাড়া করেছে। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে পড়ে রয়েছে মোটরবাইক। কার্তিক নেই। খবর পেয়েই নাকা তল্লাশি শুরু করে দেয় পুলিশ। কিন্তু কার্তিকের মোবাইল বন্ধ থাকায় টাওয়ার লোকেশন বোঝা যাচ্ছিল না। ৬ তারিখ কার্তিকের স্ত্রী থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন। সেখানে অপহরণের কথা উল্লেখ করেননি তিনি। তবে বিজেপির নেতাদের একাংশ ঘটনায় শাসকদলের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে নালিশ করছিলেন।

জেলা পুলিশ তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করেছিল। সূত্রের দাবি, কার্তিক পরিজন বা পরিচিত কারও সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছিল না। কিন্তু অন্য সূত্র মারফত তাঁর হদিস মেলে। ১০ তারিখ রাতে দক্ষিণ কলকাতার পঞ্চসায়র এলাকার একটি লজ থেকে ধরা হয় তাকে। পুলিশের দাবি, জেরায় সে স্বীকার করেছে, ওই দিন মোটরবাইক রেখে ট্রেন ধরে পৌঁছে গিয়েছিল পুরুলিয়া। সেখান থেকে নাইট সার্ভিসের বাসে কলকাতা। পরিচয়পত্র জাল করে, নাম ভাঁড়িয়ে উঠেছিল ওই লজে।

কার্তিক একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ‘কমিশন এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন। পুলিশের দাবি, লোকজনের থেকে টাকা নিয়ে জমা করেনি সে। ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে যাচ্ছে দেখে নাটক ফেঁদেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার ধৃতদের পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে ৫ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। কার্তিকের দাদা মধু গড়াই বলেন, ‘‘আমরা সবটাই শুনলাম। কিন্তু ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়নি এখনও।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘দোষী হলে আইন তার বিচার করবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুরোটাই পুলিশের দাবি। কার্তিকের বয়ান জানা যায়নি। প্রকৃত ঘটনা কী, সেটা পরিষ্কার হওয়া দরকার।’’

কার্তিক আদালতের পথে এ দিন বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না।’’ তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা পুরুলিয়ার জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি এরম ভিত্তিহীন অভিযোগ তো প্রায়ই করে থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Arrest BJP Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE