পাঞ্চেতের নেহরু পার্কে তোলা নিজস্ব চিত্র।
পাঞ্চেতের দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলাধারের সৌন্দর্য যেন আরও একটু বেড়ে গেল ওদের গান, কবিতা, খুনসুটি আর কলরবে। মঙ্গলবার নেহরু পার্কে চড়ুইভাতিতে মাতল আদ্রার অরুণোদয় হোমের আবাসিকেরা।
ওদের কেউ অনাথ, কেউ কুষ্ঠ আক্রান্ত পরিবার থেকে এসেছে। বাড়ির পথ হারিয়ে কারও ঠিকানা হয়েছে এই হোম। এ রকমের কমবেশি আড়াইশো আবাসিক কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের নিয়ে এ দিন হোম কর্তৃপক্ষ পিকনিকের আয়োজন করেছিল। আদ্রা রেলশহর থেকে বাসে চড়ে ঝাড়খণ্ডের পাঞ্চেত জলাধার। পৌঁছেই মুড়ি-ঘুগনি-পেঁয়াজ দিয়ে জলখাবার। হোমের সম্পাদক নবকুমার দাসের কথায়, ‘‘একেবারে অন্য রকমের একটা দিন কাটল ছেলেমেয়েগুলির।’’ তিনি জানান, তিন বছর ধরে হোমের আবাসিকদের নিয়ে পিকনিক করা হয়ে আসছে।
কোথাও গানের জলসা, কোথাও ফুটবলের আসর, কোথাও ফ্লাইং ডিস্কের প্রতিযোগিতা। কোথাও আবার দড়ি-টানাটানি বা ক্রিকেট খেলা। সব মিলিয়ে এ দিন জলাধার লাগোয়া নেহরু পার্ক এ দিন সরগরম করে রেখেছিল এক ঝাঁক প্রাণবন্ত ছেলেমেয়ে। হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গোটা পরিকল্পনায় সহযোগিতা করেছেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি। বিধায়ক এ দিন বলেন, ‘‘এই পার্ক নেহরুর নামে। নেহরু শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। পার্কের নামটাও এই ছেলেমেয়েগুলির আনন্দে আরও সার্থক হয়ে উঠল।’’
দুপুরের খাবারে ছিল ভাত, ডাল, বাঁধাকপির তরকারি, আলু পোস্ত, মুরগির মাংস, চাটনি আর শেষ পাতে মিষ্টি। আবাসিকদের সঙ্গে পাত পেড়ে বসেছিলেন সস্ত্রীক পূর্ণচন্দ্রবাবু আর রঘুনাথপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মধুসূদন দাস। বিধায়কের স্ত্রী সন্তোষীদেবী বলেন, ‘‘হোমের সবাই আসছে শুনে আমিও ঘরদোর ফেলে চলে এসেছি। আজকের দিনটা মনে থেকে যাবে।’’ হোমের আবাসিক, ধানবাদের উদয় মুখোপাধ্যায়, সবিতা মুখোপাধ্যায়, বলরামপুরের সুস্মিতা মিশ্র, পাড়ার অভিষেক বচ্চন মল্লিক, নমিতা মুর্মুরা বলে, ‘‘এত ভাল লাগল বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের সবাই এত ভালোবাসেন জেনে মনে হচ্ছে আর একা নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy