Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রেমের ফাঁদে জালে পড়ল মোবাইল চোর

চুরি করা মোবাইলে বে-নামে সিমকার্ড ভরে দিব্যি কাজ চলছিল। এক মহিলা পুলিশকর্মীর প্রেমের টোপ গিলে নিজের ঠিকানা বলেই শেষে সপার্ষদ গারদে ঢুকলো ‘মুচে’।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১২
Share: Save:

চুরি করা মোবাইলে বে-নামে সিমকার্ড ভরে দিব্যি কাজ চলছিল। এক মহিলা পুলিশকর্মীর প্রেমের টোপ গিলে নিজের ঠিকানা বলেই শেষে সপার্ষদ গারদে ঢুকলো ‘মুচে’।

মাস তিনেক আগে বাঁকুড়ার ছাতনার ঝাঁটিপাহাড়ি এলাকার একটি মোবাইল দোকানে চুরির ঘটনায় গড়বেতার খড়কুসমা এলাকার রমজান খান ওরফে মুচে ও তার শাগরেদ আজাদ খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১৪ জুন ঝাঁটিপাহাড়ির বাসিন্দা শুভজিৎ খাঁ-এর মোবাইল দোকান থেকে ১৯টি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ চুরি যায়। ওই সব মালপত্র মুচে ও আজাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, মুচে ও আজাদ ছাড়া আরও চার জন ওই চুরি-কাণ্ডে যুক্ত ছিল। বাকিরা এখনও পলাতক। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ঘটনার সময় ঝাঁটিপাহাড়িতে তিন দিনের গাজনের মেলা বসেছিল। সেই মেলাতেই চুড়ি, মালা, পুতুলের স্টল সাজিয়ে বসেছিল মুচেদের সঙ্গী, খড়কুসমার বাসিন্দা ধনঞ্জয় দাস ওরফে চাঁদু। মেলা চলাকালীন চাঁদুর মোবাইল ফোন খারাপ হয়ে গেলে তা সারাতে শুভজিৎবাবুর দোকানে যায় সে। চুরির ফন্দি তখনই মাথায় আসে চাঁদুর। মেলা শেষে গ্রামে ফিরে গিয়ে মুচে-সহ বাকি পাঁচ সঙ্গীকে নিয়ে ট্রেনে করে ফের ঝাঁটিপাহাড়িতে যায় চাঁদু। মাঝ রাতে দোকানের দরজা ভেঙে ল্যাপটপ ও মোবাইল হাতিয়ে ট্রেনে চেপেই গ্রামে ফিরে যায় তারা।

এ দিকে একটি চোরাই মোবাইল ফোনে বেনামে একটি সিম কার্ড তুলে ব্যবহার শুরু করে মুচে। ওই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর ধরে পুলিশ ফোনের সিমকার্ডের গ্রাহক তথ্য বের করে। পুলিশ জানতে পারে, ওই সিমকার্ডটি এক মহিলার নামে নেওয়া। এর পরেই ছাতনা থানার ওসি সলিল কুমার পাল এক মহিলা পুলিশকে দিয়ে ওই নম্বরে ফোন করান। ওই মহিলা পুলিশ প্রেমের টোপ দিতেই মুচে তার ঠিকানা জানিয়ে দেয়। সময় নষ্ট না করে সলিলবাবু পুলিশ বাহিনী নিয়ে উপস্থিত হন খড়কুসমায়। সেখানে মুচেকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তিনি। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে পড়ে মুচে জানিয়ে দেয় চুরির কাজে জড়িত তার অন্য সঙ্গীদের নাম। পুলিশ গ্রেফতার করে আজাদকেও। তবে মুচের ধরা পড়ার কথা শুনেই বাকিরা চম্পট দেয় এলাকা থেকে। মুচে ও আজাদকে গ্রেফতার করে ন’দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। শনিবার ফের ওই দুজনকে বাঁকুড়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “মেলায় স্টল দিয়েই এলাকায় রেকি করত চোরেদের এই দলটি। সুযোগ বুঝে চুরি করে চম্পট দিত। চক্রটির বেশ কয়েক জন এখনও পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mobile thief Arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE