Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হনুমানের হানায় আতঙ্ক আদালতে

বুধবার সকালেও আদালত চত্বরে একই ভাবে তাণ্ডব চালায় হনুমানটি। আদালতের লোকেরা জানান, পেয়ারা ছিনিয়ে নিতে গিয়েছিল সেটি। বাধা পেয়ে আক্রমণ করে বিক্রেতাকে। তাঁর ডান হাতে আঁচড়ে দিয়ে গাছে উঠে যায়। আদালত চত্বরে ভিড় বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে হমুমানের উৎপাতও বাড়তে থাকে।

ডানপিটে: বন দফতরের খাঁচার উপরে বসে। রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

ডানপিটে: বন দফতরের খাঁচার উপরে বসে। রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

সব্যসাচী ইসলাম
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৩
Share: Save:

হনুমানের তাণ্ডবে দিনভর নাজেহাল হচ্ছেন রামপুরহাট আদালত চত্বরে আসা লোকজন। অভিযোগ, গত তিন দিন ধরে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আদালত চত্বরে আসছে ওই হনুমান। সেটির হামলার মুখে পড়ছেন অনেকে। আঁচড়ে-কামড়ে জখমও হচ্ছেন। বিকেলের দিকে অন্য কোথাও চলে যাচ্ছে ওই প্রাণীটি।

বুধবার সকালেও আদালত চত্বরে একই ভাবে তাণ্ডব চালায় হনুমানটি। আদালতের লোকেরা জানান, পেয়ারা ছিনিয়ে নিতে গিয়েছিল সেটি। বাধা পেয়ে আক্রমণ করে বিক্রেতাকে। তাঁর ডান হাতে আঁচড়ে দিয়ে গাছে উঠে যায়। আদালত চত্বরে ভিড় বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে হমুমানের উৎপাতও বাড়তে থাকে। বেলা ১২টা নাগাদ সেটি আইনজীবী ও ল’ক্লার্কদের বসার জায়গা ‘দখল’ করে। প্রয়োজনীয় হরেক কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়। হামলার ভয়ে অনেকে ছোটাছুটি শুরু করেন। কারণ, গত সোমবার ল’ক্লার্ক জাকির হোসেনের ডান কান আঁচড়ে দিয়েছিল সেটি। অভিযোগ, এ দিনও হনমানের হামলার মুখে পড়েন ছ’জন।

শুধু আদালতে আসা লোকজনই নয়, ওই হানাদারের হামলার মুখে পড়েছেন বনকর্মীও। হনমনা ধরতে আসা রামপুরহাট তুম্বনি রেঞ্জের বিট অফিসার শুভাশিস হালদারও সেটির আক্রমণে জখম হয়েছেন। আদালতের পাশাপাশি শহরের অন্য এলাকাতেও হানা দিচ্ছে ওই হনুমান। সোমবার বিকেলে রাস্তায় দিলীপ চট্টরাজ নামে চাকলামাঠের এক বাসিন্দা কানে আঁচড়ে দেয় সেই হনুমান। পিছন দিক থেকে হঠাৎ এই আক্রমণে রাস্তায় পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান দিলীপবাবু।

রামপুরহাট আদালতের সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে হনুমানটি আদালত চত্বরে ঝামেলা পাকাচ্ছে। বিচারপ্রার্থীরা তাতে ভয় পাচ্ছেন। ভয়ে রয়েছেন আইনজীবী, ল’ক্লার্কেরাও। তাঁদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।’’

বন দফতর সূত্রে খবর, দফতরের কর্মীরা দু’দিন ধরে আদালতে ওই হনুমান ধরতে এসে ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতেই। এ দিনও বন দফতরের কর্মীরা জাল ও খাঁচা নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু হনুমানকে বাগে আনা যায়নি। দু’বার সেটিকে জালে ধরার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তাঁরা।

রামপুরহাটে বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার সুসেন কর্মকার বলেন, ‘‘ফাঁকা জায়গা পেলে জাল পেতে ধরতে সুবিধা হয়। আদালত চত্বরে প্রচুর মোটরবাইক থাকায় কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহারে বিধিনিষেধ রয়েছে।’’

আদালত চত্বরে বন দফতরের খাঁচার উপরে বসেই দাঁত খিচিয়েছে ওই হনুমান। আদালতে আসা অনেকে বলছেন, ‘‘ও যেন বলতে চাইছে, আমাকে ধরে দেখাও দেখি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panic Monkey Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE