খাঁচাবন্দি। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে সাফল্য মিলল। বুধবার বিকেলে ধরা পড়ল দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রামে আতঙ্ক তৈরি করা হনুমান।
মাসখানেক ধরে এলাকায় পঞ্চাশের উপরে বাসিন্দাকে জখম করার পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মীদের বিস্তর চেষ্টায় সোমবার একটি হনুমান ধরা হয়েছিল। গ্রামেরই এক বাসিন্দার গোয়ালঘরে ঢুকে পড়ায় জাল ফেলে সেটিকে ধরা হয়। সেই স্বস্তি স্থায়ী হয়েছিল ঘণ্টাকয়েক। বিকেলে ফের এক শিক্ষক সহ বেশ কয়েক জনকে ফের কামড়ে, আঁচড়ে জখম করার পরে গ্রামবাসী বুঝতে পারেন আতঙ্ক তৈরি করা হনুমানটিকে আদৌ ধরা যায়নি।
মঙ্গলবার থেকে ফের খাঁচা পেতে সমানে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বনকর্মীরা। খাঁচায় রাখা হয়েছিল পাউরুটি, বেগুন-টমেটো আলু সহ নানা লোভনীয় খাবার। মঙ্গলবার ‘টোপ’ না গিললেও, বুধবার বিকেলে খাবারের লোভে খাঁচায় ঢুকে ফেঁসে যায় পবন-নন্দন। তবে এ বার যে ত্রাস সৃষ্টিকারী হনুমানই ধরা পড়েছে সে বিষয়ে নিঃশংসয় গ্রামবাসী ও বন দফতর। বীরভূমের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলছেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত হনুমানটি ধরা পড়ায় আমরা খুশি। স্বস্তিতে থাকবেন স্থানীয়
মানুষও। ধরা পড়া হনুমানটিকে আপাতত বোলপুরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হবে। তার পরে সেটিকে ছাড়ার কথা ভাবা হবে।’’
ঘটনা হল, এমনিতে গাছের আড়ালে বা বাড়ির ছাদে লুকিয়ে থাকছিল হনুমানটি। অতর্কিতে নেমে এসে পথচলতি লোক থেকে মহিলা, শিশুকে কামড়ে-আঁচড়ে জখম করছিল। দিন দিন বাড়ছিল জখমের সংখ্যা। পুরুষ, মহিলা থেকে কেউই স্বস্তিতে থাকতে পারছিলেন না। রবি ও সোমবার অন্তত ১০ জনকে কামড়ে আঁচড়ে রক্তাক্ত করেছিল। মাসখানেক ধরে ওই হনুমানের উপদ্রপে আতঙ্কিত ছিলেন খণ্ডগ্রামের বাসিন্দারা। হাসপাতালেও জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের অভাব দেখা দিয়েছিল। তাই যে কোনও ভাবে সেটিকে ধরতে মরিয়া ছিলেন সকলেই।
এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ ইলিয়াস মণ্ডল, শেখ রিয়াজউদ্দিন, শেখ হবিব, শেখ রহমতরা বলছেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত বনকর্মীরা হনুমানটিকে ধরে আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছেন।’’ স্থানীয় খণ্ডগ্রাম দাসপুর শালকা হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কারিবুল হোসেন বলছেন, ‘‘স্কুল ছুটির আগে সংখ্যালঘু ছাত্রাবাসে তিন ছাত্রকে জখম করছিল হনুমানটি। সামনের সোমবার স্কুল খুলছে। আবার কী হবে এই ভেবে আতঙ্কে ছিলাম। ধন্যবাদ বন দফতরের কর্মীদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy