প্রতিবাদে-প্রতিরোধে: বিষ্ণুপুর শহরের রাস্তা দিয়ে মিছিল করে শহরের পড়ুয়ারা চলেছেন মহকুমাশাসকের দফতরে। ছবি: শুভ্র মিত্র
একটা পর্যায়ে আমার মনেও ধন্দ তৈরি হয়েছিল। ঠিক করছি কি? থানায় যাওয়ার পরে কিছু প্রভাবশালী লোকজন আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘এনাফ হয়েছে। এ বার বন্ধ করুন।’’ ‘বোঝানোর’ নাম করে আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও হয়েছে এক বার।
ভয় করেছে। কিন্তু মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হয়েছে, মা হিসাবে আমি পিছিয়ে আসতে পারি না। রুখে আমাকে দাঁড়াতেই হবে।
এই লড়াইয়ে আমি একা নই। আমি শহরের অনেক মানুষকে দূর থেকেই পাশে পেয়েছি। তাঁরা আমার সঙ্গে হয়তো থানায় যাননি। কিন্তু বলেছেন, আমার পাশে রয়েছেন। অভিযুক্তকে তাঁরা কখনও প্রশ্রয় দেবেন না।
আমরা সবাই ঘটনাটার পরে আতঙ্কে রয়েছি। বাড়িতে তিন দিন হাঁড়ি চাপেনি। ঠিক মতো খাওয়াদাওয়াও করতে পারছি না কেউ। মেয়েটা ঝিমিয়ে রয়েছে। আমি জানি না, কাল কী হবে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। কিন্তু এটা জানি, যা করছি ঠিক করছি। মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়ানোর থেকে প্রতিবাদ করাই শ্রেয়।
২২ বছর ধরে এই বিষ্ণুপুর শহরে রয়েছি। এমন ঘটনা প্রথম নয়। একটা বিহিত করার দরকার ছিল। মেয়ের মুখে আতঙ্ক দেখে আমি শিক্ষা নিয়েছি— আমাদের ভাল আমাদেরই বুঝে নিতে হবে। ও সকাল ১০টায় টিউশনে যাচ্ছিল। তাতেই এমন হয়েছে। অনেক ছেলেমেয়ে তো দূর-দূরান্ত থেকে পড়ে রাতে বাড়ি ফেরে। তাদের নিরাপত্তা দেবে কে, যদি আমরাই সবাই না রুখে দাঁড়াই?
আমি রাজনীতি জানি না। রাজনীতি বুঝতেই চাই না। শুধু একটাই অনুরোধ করছি সমস্ত মা-বাবার কাছে। যদি সন্তান এসে জানায়, তার সঙ্গে কোনও অন্যায় হয়েছে তাহলে রুখে দাঁড়ান। তার পাশে দাঁড়ান। অন্যায়ের সঙ্গে আপস করবেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy