Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সংসার ছেড়ে আবার জেলে

জেল-পালিয়ে সংসার পেতেছিলেন সাহেবরাম। চার মাস পরে, মঙ্গলবার বর্ধমান শহর থেকে তাঁকে পাকড়াও করল পুলিশ। বিচারকের নির্দেশে আবার ফিরতে হল জেলে। 

নিবারণ মুর্মু। নিজস্ব চিত্র

নিবারণ মুর্মু। নিজস্ব চিত্র

রথীন্দ্রনাথ মাহাতো 
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৫
Share: Save:

জেল-পালিয়ে সংসার পেতেছিলেন সাহেবরাম। চার মাস পরে, মঙ্গলবার বর্ধমান শহর থেকে তাঁকে পাকড়াও করল পুলিশ। বিচারকের নির্দেশে আবার ফিরতে হল জেলে।

নিবারণ মুর্মু ওরফে সাহেবরামের বাড়ি বান্দোয়ানের বনগোড়া গ্রামে। ঊনচল্লিশে পড়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০০৬ সালে কুশবনি গ্রামে একটা খুন হয়েছিল। তাতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন সাহেবরাম। তথ্য-প্রমাণ তাঁর বিরুদ্ধেই যায়। ২০০৭ সালে বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। সাহেবরামের ঠিকানা হয় মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল।

পুলিশ এবং স্থানীয় কিছু সূত্রের দাবি, মেলায় গিয়ে আড়শার এক যুবতীর প্রেমে পড়েছিলেন সাহেবরাম। জেলে যখন যান, তখন তাঁদের প্রায় বছর চারেকের সম্পর্ক। গরাদ দু’জনের মাঝে দেওয়াল তুলতে পারেননি। সেই যুবতী জেলে গিয়ে দেখা করে আসতেন। এ দিকে সংসার পাতার সাধ আরও মরিয়া হয়ে উঠছিল সাহেবরামের বন্দি দিনযাপনে। বার দু’য়েক প্যারোলে ছাড়া পেয়ে বাড়ি এসেছিলেন। কিন্তু সঙ্গে ছিল পুলিশ। কড়া পাহারা। পুলিশের দাবি, তখন ছক কষেও পালাতে পারেননি।

পালাতে পারেননি, তবে ভাল ব্যবহারে পুলিশের মন জয় করে ফেলেছিলেন। গত বছর সেপ্টেম্বরে আবার প্যারোলে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে আসেন। বাবা ছোট বেলাতেই মারা গিয়েছেন। সাহেবরাম জেলে থাকার সময়ে মৃত্যু হয়েছে মায়েরও। দাদারা রয়েছেন বাড়িতে। তবে বিশেষ সম্পর্ক নেই তাঁদের সঙ্গে। এই বারে সাফল্যের সঙ্গে পাহারাদারদের চোখে ধুলো দিয়ে পগারপার হন সাহেবরাম!

পুলিশ জানাচ্ছে, টনক যখন নড়ল, বন্দির খোঁজে সবাই হন্যে হয়ে ফিরছেন। এ দিকে, সাহেবরাম ততক্ষণে চলে গিয়েছেন প্রেমিকার কাছে। তাঁকে নিয়ে ঘুরে-ফিরে পৌঁছেছেন বর্ধমান শহরে। নাম ভাঁড়িয়ে মিশে গিয়েছেন ভিড়ে। পরিচিত এক জনের মাধ্যমে চালকলে কাজও জোগাড় করে ফেলেছেন। বাড়ি ভাড়া নিয়ে দিব্যি সংসার করছেন।

পুলিশের দাবি, সাহেবরামের প্রেমিকাও বাড়িছাড়া— এই খবর পাওয়ার পরে তদন্তে একটা দিশা মেলে। ফোনের সূত্র ধরে গত মঙ্গলবার সেই চালকলে পৌঁছন তদন্তকারীরা। সঙ্গে স্থানীয় থানার পুলিশ। নাম নিয়ে গোড়ায় ধন্দ ছিল। কিন্তু পরিচয়পত্র দেখতেই আসল ব্যাপারটা খোলসা হয়ে যায়। ওই রাতেই দু’জনকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছিল। বুধবার কোর্টে তোলা হয়। সাহেবরামকে চোদ্দো দিন জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। মহকুমাশাসক (মানবাজার) আফজল আবরার জানান, ওই যুবতীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে পরিবারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Jail Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE