Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পুরুলিয়ায় সাফাইয়ে নামলেন পুরকর্মীরা

প্রতিমার কাঠামো, ফুল, রাংতা পুরুলিয়া শহরের জলাশয়গুলিতে ভাসলেও সাফাইয়ে নেমেছে পুরসভা। দুই জেলার শহরগুলোর মধ্যে এখানেই কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম এই শহর। জলকষ্টে দীর্ণ এই শহরে জলাশয়গুলির গুরুত্ব কম নয়। কাজেই কাঠামো-সহ প্রতিমার নানা সামগ্রী দিনের পর দিন জলে পচতে থাকায় দূষণের জেরে কী সমস্যা হয়, তা যাঁরা নিত্যদিন পুকুর ব্যবহার করেন তাঁরা হাড়ে হাড়ে বোঝেন।

পুরুলিয়ার নতুনবাঁধ থেকে কাঠামো তোলা চলছে।—নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়ার নতুনবাঁধ থেকে কাঠামো তোলা চলছে।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৫১
Share: Save:

প্রতিমার কাঠামো, ফুল, রাংতা পুরুলিয়া শহরের জলাশয়গুলিতে ভাসলেও সাফাইয়ে নেমেছে পুরসভা। দুই জেলার শহরগুলোর মধ্যে এখানেই কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম এই শহর।

জলকষ্টে দীর্ণ এই শহরে জলাশয়গুলির গুরুত্ব কম নয়। কাজেই কাঠামো-সহ প্রতিমার নানা সামগ্রী দিনের পর দিন জলে পচতে থাকায় দূষণের জেরে কী সমস্যা হয়, তা যাঁরা নিত্যদিন পুকুর ব্যবহার করেন তাঁরা হাড়ে হাড়ে বোঝেন। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে এ বার পুরসভা সচেষ্ট হয়েছে। উদ্যোগী হয়েছে কিছু পুজো কমিটিও। পুলিশ প্রশাসনও পুজোর আগে কমিটিগুলিকে কাঠামো তোলার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল।

পুরুলিয়ার পুরপ্রধান কে পি সিংহ দেও বলেন, ‘‘বিসর্জন দেওয়ার কয়েকদিন পরে প্রতিমার কাঠামো তোলা হলে দেখা যায়, জলে প্রতিমার রং ভাসছে। অন্যান্য জিনিসও পচে দূষণ হতো। তাই এ বারে আমরাই ঠিক করেছিলাম, বিসর্জনের পরে পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা কাঠামো না তুললে পুরসভাই নিজে উদ্যোগী হয়ে কাঠামো তুলবে। সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, জল পরিষ্কার রাখতে জলাশয়ে ব্লিচিং, চূন দিয়ে ঘাটগুলির জল পরিশোধনের কাজও চলছে।

আগে পুরুলিয়া শহরের বেশির ভাগ প্রতিমার বিসর্জন হতো সাহেববাঁধে। তবে এই জলাশয় জাতীয় সরোবরের মর্যাদা পাওয়ার পর থেকে সেখানে বিসর্জন নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। সা্হেব বাঁধের বদলে পাশের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল ট্যাঙ্কে বিসর্জন দেওয়া হয়। এই জলাশয়ে প্রচুর মানুষ স্নান, কাপড় কাচা, বাসনপত্র ধোওয়ার কাজ করেন। ফলে আগে কাঠামো পড়ে থাকায় বাসিন্দাদের কাছে অভিযোগ শোনা যেত। যদিও এ দিন এই জলাশয়ে গিয়ে দেখা গিয়েছে পুরসভার জলাশয়ের দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু মাহালি ও পুরসভার পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পার্থসারথী সেনগুপ্ত কাঠামো তোলার কাজ দেখভাল করছেন। পার্থসারথীবাবু বলেন, ‘‘এই পুকুরে এ দিন সকাল পর্যন্ত ২৭টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। বেশির ভাগ কাঠামোই উদ্যোক্তারা তুলে নিয়েছেন। বাকি কাঠামো পুরসভা তুলছে। পুজো উদ্যক্তরা পাড় থেকে নিয়ে যাবেন।’’

গাড়িখানা সর্বজনীনের রণজিৎ মিত্র, ভাগাবাঁধ সর্বজনীনের দেবকুমার দাঁ, তেলকল পাড়া সর্বজনীনের অজিত মাহাতো ও রথতলা সর্বজনীনের সভাপতি শ্রীমন সরকার জানান, বিসর্জনের পরে তাঁরা নিজেদের উদ্যোগেই কাঠামো তুলে নেন। কারণ এই শহরে জলাভাবের ব্যাপারে তাঁরা সচেতন। তাই জল দূষণমুক্ত রাখতে তাঁরা সচেষ্ট।

সাফাইয়ের কাজ শুরু হলেও পুরুলিয়ার সমস্ত জলাশয় বিসর্জনের পরে দূষণমুক্ত করার কাজে এখনও সবার জড়ানো বাকি রয়ে গিয়েছে। এ দিনই রাধাকৃষ্ণ মোড়ের অদূরে রাজাবাঁধ, পোকাবাঁধ, বুচাবাঁধ, পুরনা বাঁধের জলে ফুল, বেলপাতা, চাঁদমালা, ধূপের প্যাকেট, লাল শালুর টুকরো, প্লাস্টিক ইত্যাদি ভাসতে দেখা গিয়েছে। এই জলাশয়গুলিতে প্রতিমার বড় কাঠামো সে ভাবে কম দেখা গেলেও পুজোর উপকরণ যথেচ্ছে পরিমাণে ভাসতে দেখা গিয়েছে। পুরসভার জলাশয়ের দায়িত্বে থাকা কৃষ্ণেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘আমরা প্রতিমার কাঠামোর তোলায় গুরুত্ব দিচ্ছি। তবে পুজোর উপকরণও দূষণ ঘটায়। এগুলি পরে পরিষ্কার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE