Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Bankura University

আশা পূরণের পথে সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে প্রাচীন ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়।

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তির পথে। নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তির পথে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৫৬
Share: Save:

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়কে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করার ছাড়পত্র আগেই দিয়েছিল রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর। তবে পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে সমস্যা মিটতে চলেছে।

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে প্রাচীন ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়। শুক্রবার বিষ্ণুপুরে শুরু হওয়ায় মিউজ়িক ফেস্টিভ্যালের মঞ্চে ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করার আশ্বাস দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও বাঁকুড়ার সহকারী সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল।

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই বিষ্ণুপুরের রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজটিকে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন জানিয়ে এসেছেন। রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরও ছাড়পত্র দিয়েছে আগেই। তবে সেখানে পরিকাঠামো উন্নয়ন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি ও বিধায়ক এগিয়ে আসায় কাজ সহজ হয়েছে। সঙ্গীত কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

উপাচার্য জানান, শীঘ্রই ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়টিকে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজ়িকিউটিভ কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে। তার পরেই এই সংক্রান্ত চিঠি ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে

পাঠানো হবে।

বিষ্ণুপুর পুরসভার সাহায্যপুষ্ট ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়কে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন ২০১৭ সালে জানান সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে সেই আবেদনের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করার বিষয়ে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড়পত্র দেয় রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর। তবে পরিকাঠামোগত নানা সমস্যায় কাজটি এত দিন এগোয়নি।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি তুষারকান্তিবাবু ও শুভাশিসবাবু বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। উপাচার্যের তরফে ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এ দিন মিউজ়িক ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী মঞ্চে তুষারকান্তিবাবু ঘোষণা করেন, “আমি বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে ওই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়টির পরিকাঠামো গড়তে সাত লক্ষ টাকা বরাদ্দ করতে চলেছি।” ওই মঞ্চেই শুভাশিসবাবুও বলেন, “জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের তরফেও কী ভাবে রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়টির পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে অর্থ বরাদ্দ করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। শীঘ্রই ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হবে।”

ইতিহাস বলছে, ১৮৮৫ সালে রামশরণ সঙ্গীত বিদ্যালয়ের পথ চলা শুরু। ১৯৪৫ সালে তা মহাবিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। আগে তা বিষ্ণুপুরের চকবাজার এলাকায় থাকলেও মহাবিদ্যালয়ে উন্নীত হওয়ার পরে, বিষ্ণুপুর পুরসভা চত্বরে নতুন ভবনে সরে আসে। বর্তমানে সেখানে প্রায় ১৫০ জন সঙ্গীতের তালিম নেন। বিষ্ণুপুর ঘরানার ধ্রুপদী সঙ্গীতের পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি-সহ পাখোয়াজ, তবলা, এস্রাজের মতো বিভিন্ন যন্ত্র সঙ্গীতের শিক্ষাও চলে।

রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের তরফেই দু’বছরের ডিগ্রি কোর্স ও চার বছরের স্কুল কোর্স করার সুযোগ পান ছাত্রছাত্রীরা। অধ্যক্ষ ছাড়াও, সঙ্গীত ও যন্ত্রের শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ন’জন। চার জন কর্মী রয়েছেন।

রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “এখানকার শিক্ষক ও কর্মীরা নামমাত্র বেতন পান। তাঁদের সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগেই বছরের পর বছর ধরে এই মহাবিদ্যালয়টি টিকে রয়েছে। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কলেজটি অন্তর্ভুক্ত হলে, আগামী দিনে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে বলেই আমরা আশাবাদী।”

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, চলতি শিক্ষাবর্ষেই রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স চালু করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। দু’টি কোর্সই হবে এক বছরের। পরবর্তী কালে সাড়া মিললে ,সেখানে স্নাতক স্তরের কোর্স চালুর বিষয়েও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভাববে। সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মীদের বেতন পরিকাঠামো নিয়েও শীঘ্রই আলোচনা হবে বলে আশ্বাস দেন উপাচার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura University Music university
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE