Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Social Distancing

বাড়িতে থাকতে বলছে প্রশাসন, শুনছে আর কে!

বৃহস্পতিবার দুবরাজপুরের হেতমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফের সেই অভিযোগের প্রমাণ মিলল।

সামাজিক ব্যবধান ভুলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

সামাজিক ব্যবধান ভুলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২০ ০৪:৩৫
Share: Save:

সরকারি নিভৃতবাস থেকে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে ছেড়ে দেওয়ার পরে করোনা-রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিক এবং ভিন্ রাজ্য অন্য কাজে গিয়ে ফিরে আসা মানুষজনকে বাড়িতে থাকার অনুরোধ বারবার করছে জেলা প্রশাসন। অনেকেই সেই আবেদন কানে তুলছেন না বীরভূমে অভিযোগ উঠছিলই। এর ফলে বাড়ছে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা।

বৃহস্পতিবার দুবরাজপুরের হেতমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফের সেই অভিযোগের প্রমাণ মিলল। প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ থেকে এলাকায় ফেরা এক যুবককে সরকারি নিভৃতবাসে রেখে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে তাঁকে বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছিল। অভিযোগ, করোনার কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেলেও শুধু এলাকায় নয়, দুবরাজপুর বাজারেও ঘুরে বেড়িয়েছেন ওই যুবক। এখন তাঁর রিপোর্ট করোনা-পজ়িটিভ আসায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার একই দিনে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার অন্তর্গত দুবরাজপুর ব্লকে ছ’জন করোনা রোগীর হদিশ মিলেছে। হেতমপুরের ওই যুবক ছাড়াও মুম্বই ফেরত সাহাপুরের এক দম্পতি ও তাঁদের বছর তিনেকের সন্তানের শরীরে করোনা

সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ ছাড়া দিল্লি থেকে লক্ষ্মীনারায়ণপুরের পাকুরিয়া গ্রামে ফেরা এক প্রৌঢ় ও গোহালিয়াড়া পঞ্চায়েতের মেটেলা গ্রামের এক যুবকের শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঘটেছে। মেটেলা গ্রামের যুবক দিন দশেক আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে ফিরেছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছ’জনকেই নমুনা নেওয়ার পরে বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছিল। আক্রান্তদের প্রায় সকলেই সে কথায় আমল দেননি। তবে সবচেয়ে বেশি বাইরে বেরিয়ে মেলামেশা করেছেন হেতমপুরের যুবকটি।

বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘‘শিশু-সহ ছজনকেই বোলপুর কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, বারণ করা সত্বেও কেউ যদি কথা না শোনেন, তা হলে প্রশাসনের পক্ষে কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায়।’’ তিনি জানান, ওই ছ’জনেরই সংস্পর্শে আসা লোকজনের তালিকা তৈরি করে তাঁদের সরকারি নিভৃতবাসে সরানো হয়েছে।

এ দিকে, জেলায় লাগাতার আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির মাঝে ছেদ পড়ল শুক্রবার। এ দিন বিকেল পর্যন্ত বীরভূম বা রামপুহাট স্বাস্থ্য জেলায় নতুন সংক্রমণের কোনও খবর নেই। যদিও তাতে স্বস্তি পাওয়ার কারণ দেখছে না প্রশাসন। বরং গত দু’সপ্তাহ ধরে উল্লেখযোগ্য ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ বেড়েছে। আগামী দিনে এত জনের চিকিৎসা কোথায় হবে, আপাতত সেটাই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা।

বোলপুর ও রামপুরহাটে দু’টি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে চিকিৎসার পরে অনেকে সুস্থও হয়েছেন। কিন্তু, করোনা রোগী বাড়তে থাকায় ফের বোলপুর মহকুমায় একটি নার্সিংহোমকে কোভিড হাসপাতাল করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে চিন্তা শুরু করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখার জন্য নন-হোম কোয়ান্টিন সেন্টার বা প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাসের সংখ্যাও বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ জানিয়েছেন, জেলায় ৩৯৭টি প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত জেলা ৩২ হাজারেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Social Distancing Birbhum Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE