Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিবাদে রেলকে চিঠি

আদ্রায় উচ্ছেদের নোটিস

রেলের জায়গায় থাকা অবৈধ দোকান তো বটেই, বৈধ দোকানদারদেরও এক মাসের মধ্যে দোকান খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কেন উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হল, এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার ব্যবসায়ীরা।

আদ্রা স্টেশনের পাশের এই দোকানগুলিই সরিয়ে নিতে বলেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র

আদ্রা স্টেশনের পাশের এই দোকানগুলিই সরিয়ে নিতে বলেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০১:২৫
Share: Save:

দেশের নব্বইটি স্টেশনের ‘রি-ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের তালিকায় স্থান পেয়েছে আদ্রা স্টেশন। আর সেই জন্য স্টেশন চত্বর লাগোয়া এলাকার দোকানদারদের সরে যাওয়ার নোটিস দিয়েছে রেল।

রেলের জায়গায় থাকা অবৈধ দোকান তো বটেই, বৈধ দোকানদারদেরও এক মাসের মধ্যে দোকান খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কেন উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হল, এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় তৃণমূলের তরফেও নোটিসের প্রতিবাদ করে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে স্টেশনের ‘রি-ডেভেলপমেন্ট’-এর জন্য এ ছাড়া উপায় নেই বলে দাবি করেছেন ডিআরএম (আদ্রা) শরদকুমার শ্রীবাস্তব। তিনি বলেন, ‘‘রেলবোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আদ্রা স্টেশনে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেই জন্যই অবৈধ দোকান সরিয়ে নেওয়া ও বৈধ দোকানগুলিকে খালি করতে বলা হয়েছে।’’

রেল সূত্রের খবর, দেশের নব্বইটি স্টেশনকে মডেল হিসাবে গড়ে তোলা হবে। তার জন্যই এই ‘রি-ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্প। প্রায় একশো কোটি টাকা খরচ করে স্টেশন এবং স্টেশন চত্বরের সার্বিক উন্নয়ন করা হবে। চত্বরের সৌন্দর্যায়ন হবে। লিফট আর চলমান সিঁড়ি বসবে। আমূল সংস্কার হওয়ার কথা ফুট ওভারব্রিজের। ইতিমধ্যেই এই ‘ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট’ তৈরি করা হয়েছে। কী ভাবে কাজ হবে সেই ব্যাপারে দিল্লিতে গিয়ে রেল বোর্ডের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা সেরে এসেছেন এডিআরএম (আদ্রা) ধনেশ্বর মোহান্ত ও সিনিয়র ডিইএন (কেঅর্ডিনেশন) হরসিমরন সিংহ। তবে কাজ কবে থেকে শুরু হবে, সেই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

ডিআরএম জানিয়েছেন, স্টেশন চত্বর খালি করে তাঁরা দ্রুত কাজ শুরু করতে চাইছেন। আদ্রার রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, আধুনিক মানের স্টেশন তৈরির জন্য যতটা জায়গা লাগবে, সেটা নেই। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের দোকানগুলি উচ্ছেদ করতে হচ্ছে। প্রথমে স্থির হয়েছিল স্টেশন লাগোয়া এলাকায় থাকা অবৈধ দোকানগুলি সরিয়ে দেওয়া হবে। পরে দেখা গিয়েছে, বৈধ দোকানও সরাতে হবে।

স্টেশন লাগোয়া ওই এলাকায় বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে দোকানের সংখ্যাটা প্রায় ৭০। যাত্রীরা স্টেশন চত্বরের খাবারের দোকান ও হোটেলের উপরেও নির্ভর করে থাকেন। রেলশহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় উচ্ছেদের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন অনেক ছোট ও বড় ব্যবসায়ী। দিলীপ মোদী, দিলীপ গুপ্তরা বলেন, ‘‘কয়েক দশক ধরে এখানে দোকান চালিয়ে আসছি। দোকান উঠিয়ে দিলে আমাদের মতো অনেক পরিবারের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যাবে।’’ ওই এলাকায় বৈধ দোকান রয়েছে এমন কয়েকজনের দাবি, এক সময়ে রেলই তাঁদের দোকান ভাড়ায় দিয়েছিল ব্যবসা করার জন্য। তাই পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও রেলকেই করতে হবে।

একই দাবি তুলেছে তৃণমূলও। দলের আদ্রা শহর কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে জানান, তাঁরা ইতিমধ্যেই উচ্ছেদের নোটিসের প্রতিবাদ জানিয়ে রেলকে চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে স্টেশন লাগোয়া এলাকায় ব্যবসা করে সংসার প্রতিপালন করছেন শতাধিক ব্যবসায়ী। পুনর্বাসন না দিয়ে তাঁদের উচ্ছেদ করলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।” তবে ডিআরএম দাবি করেছেন, অবৈধ দোকানদারদের পুর্নবাসন দেওয়ার দায়িত্ব রেলের নয়। বৈধ দোকানদারদের দোকান দেওয়ার সময়েই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রয়োজন হলে ওই জায়গা যে কোনও সময়ে রেল ফিরিয়ে নিতে পারে।

ব্যাপারটা এ বার কোন দিকে গড়ায়, চাপানউতোরের মধ্যে সেই দিকেই আপাতত তাকিয়ে সব পক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railway Adra Station আদ্রা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE