অপেক্ষা: মেলার আগে বিষ্ণুপুরের লালগড় প্রকৃতি উদ্যানে উদ্বোধন হল তাঁবুর। ছবি: শুভ্র মিত্র
শাল জঙ্গলের পাশে তাঁবুতে রাত কাটানোর ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় পর্যটকদের জন্য বুধবার লালগড় প্রকৃতি উদ্যানে ১০টি তাঁবুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করল মহকুমা প্রশাসন। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘দিনভর বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রাতটা তাঁবুতে কাটাতে চান অনেক পর্যটক। তাঁদের জন্যই লালগড়ে তাঁবু খাটানো হল।’’ তিনি জানান, তাঁবুর মধ্যে স্লিপিং ব্যাগ, আরাম কেদারা প্রভৃতি থাকবে। দু’বেলা খাবার ও প্রাতরাশ-সহ জনপ্রতি খরচ নেওয়া হবে ১৫০০ টাকা। বিষ্ণুপুর ট্যুরিজমের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই কিছু দিন পর থেকেই পর্যটকেরা তাঁবু ‘বুক’ করতে পারবেন।
৩১তম বিষ্ণুপুর মেলা শুরু হচ্ছে ২৩ জানুয়ারি। সেই উপলক্ষে বিষ্ণুপুরের পর্যটন প্রসারে তাঁবুতে রাত কাটানোর ব্যবস্থা চালু করা হয়। তাঁবু পাতা হচ্ছে ফুলে সাজানো লালগড় প্রকৃতি উদ্যানের মধ্যে। তার এক পাশে লালবাঁধ। অন্য দিকে রয়েছে শালের জঙ্গল। লালগড় ঘেরা কাঁটাতারের বেড়ায়। তারও বাইরে কাটা হয়েছে পরিখা। মহকুমা প্রশাসনের সূত্রে জানানো হয়েছে, রাতে প্রকৃতি উদ্যানে রক্ষীও থাকছে। এ দিন উদ্বোধনে মহকুমাশাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত।
মেলার জন্য ইতিমধ্যে সাজতে শুরু করেছে বিষ্ণুপুর শহর। ১৯৮৮ সালে বাঁকুড়া জেলার হস্তশিল্পী ও লোকশিল্পীদের আর্থিক বিকাশ ও তাঁদের শিল্পের প্রসারের লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল বিষ্ণুপুর মেলা। পাঁচমুড়ার টেরাকোটা, শুশুনিয়ার পাথর শিল্প, বিকনার ডোকরা ও বিষ্ণুপুরের কাঁসা, শঙ্খ, বালুচরী, লণ্ঠন-সহ নানা শিল্প সামগ্রী নিয়ে গোড়ায় মেলা শুরু হয়েছিল গড়দরজা লাগোয়া মাঠে।
তারপরে মেলার স্থান কয়েকবার পরিবর্তন হয়েছে। বিষ্ণুপুরের মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রামশঙ্কর মণ্ডল জানান, টুসু, ভাদু, রাবণকাটা, ছৌনাচ শিল্পীদের সঙ্গেই অনুষ্ঠান করবেন বিষ্ণুপুর, কলকাতা, মুম্বইয়ের শিল্পীরাও। স্থানীয় শিল্পীদের অডিশনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হচ্ছে।
ইতিমধ্যে সেজে উঠছে জোড় শ্রেণির মন্দির এবং নন্দলাল মন্দির প্রাঙ্গণ। তৈরি হচ্ছে বাঁশ ও কঞ্চির তৈরি টেরাকোটা ঘোড়ার আদলে সুউচ্চ ঘোড়া। ‘যামিনী রায় আট গ্যালারি’ নাম নিয়ে আস্ত এক গ্রামই যেন উঠে আসছে মেলার মাঠে। খড়ের চালের বাড়ির উঠোনে বাঁকুড়ার হস্তশিল্পীরা তাঁদের সম্ভার যেমন প্রদর্শন করবেন, তেমনই হাতে-কলমে তৈরি করে দেখাবেন কী ভাবে তৈরি হয় শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy