Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দ্বারকেশ্বরে নিখোঁজ

পনেরো বছর বয়স থেকে নদীটা তাঁর কাছে হাতের তেলোর মতোই চেনা। সেই দ্বারকেশ্বরে নিখোঁজ হয়ে গেলেন বৃদ্ধ হাসেম আলি খান।

ঝুঁকি: বিষ্ণুপুরের প্রকাশ ঘাটে এ ভাবেই রোজ পারাপার করেন অনেক মানুষজন। ছবি: শুভ্র মিত্র। (ইনসেটে হাসেম আলি খান। )

ঝুঁকি: বিষ্ণুপুরের প্রকাশ ঘাটে এ ভাবেই রোজ পারাপার করেন অনেক মানুষজন। ছবি: শুভ্র মিত্র। (ইনসেটে হাসেম আলি খান। )

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৯
Share: Save:

পনেরো বছর বয়স থেকে নদীটা তাঁর কাছে হাতের তেলোর মতোই চেনা। সেই দ্বারকেশ্বরে নিখোঁজ হয়ে গেলেন বৃদ্ধ হাসেম আলি খান। বৃহস্পতিবারের ঘটনা।

বিষ্ণুপুর ব্লকের উলিয়াড়া পঞ্চায়েতের প্রকাশ গ্রামের পাঠানপাড়ার বাসিন্দা হাসেম। পেশায় গবাদি পশুর ব্যবসায়ী। তাঁর ছেলে মইনুর ইসলাম খান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বাবা যখন উলিয়াড়া ঘাট দিয়ে নদী দু’টি মোষ নিয়ে বসানিপাড়া গিয়েছিলেন তখন নদীতে হাঁটু জল। সঙ্গে ছিলেন গ্রামের লাল খান। কাজ সেরে দুপুরে বসানিপাড়া ঘাট দিয়েই ফিরছিলেন। তখন জল বেড়ে গিয়েছে কিছুটা। লাল পেরিয়ে গেলেও হাসেম পেরোতে পারেননি।

লাল জানাচ্ছেন, হাঁটু ছাড়িয়ে জল তখন উঠে এসেছিল বুকের কাছে। বছর বাষট্টির হাসেম প্রায়ই ওই নদ দিয়ে পারপার করেন। ভেবেছিলেন, চেনা পথেই পার হয়ে যাবেন।

ঘটনার সময়ে উল্টো দিকের উলিয়াড়া ঘাটে স্নান করছিলেন নিমাই লোহার। শুক্রবার সেই ঘাটে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, ‘‘চাচা জলের টানটা বুঝতে পারেননি। টাল সামলাতে পারছেন না দেখে আমিও ঝাঁপালাম। কিন্তু নিমেষের মধ্যে জলের টানে ভেসে গেলেন।’’ তিনি জানান, অনেকটা সাঁতরেও আর নাগাল পাননি হাসেমের।

ততক্ষণে গ্রামের লোক ছুটে এসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বিষ্ণুপুর মহকুমা অফিস থেকে চলে আসেন প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরাও। স্পিড বোট নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত আঁতিপাতি করে খোঁজ চলে। শুক্রবার প্রকাশঘাটে পাঠানপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, তখনও খোঁজ চলছে। রাতে তল্লাশি বন্ধ ছিল। এ দিন দুপুরে আবার স্পি়ড বোট নিয়ে নামা হয়। বিষ্ণুপুর মহকুমাশাসক মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকেই উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে আছে।’’

খবর পাওয়ার পরেই ভেঙে পড়েছেন হাসেমের স্ত্রী গুলবাহার বিবি। তাঁকে আগলে রেখেছেন পড়শিরা। হাসেমের ভাই হোসেন আলি বলেন, ‘‘ভরা নদ পেরোতে গিয়েই কাল হল।’’ বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজের পরিবারের তরফে একটি ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়াররাও উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসেমের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dwarakeshwar Accident Drowning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE