Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সমাবর্তনের মুখে খোলা চিঠি

ছাত্রছাত্রীরা পোস্টার সাঁটিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যা থেকেই রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে লেখা একটি খোলা চিঠি ঘুরতে থাকে ছাত্রছাত্রী হোয়্যাটস অ্যাপ গ্রুপে।

সমাবর্তনে যোগ দিতে পৌঁছলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (

সমাবর্তনে যোগ দিতে পৌঁছলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (

বাসুদেব ঘোষ
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩৬
Share: Save:

বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নির্ধারিত সময়সূচি মতো রবিবার বিকেলেই শান্তিনিকেতনে পৌঁছেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ বিশ্বভারতীর কুমিরডাঙা মাঠে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের হেলিকপ্টার নামা দেখতে ভিড় করেন অনেকে।

কিন্তু, সমাবর্তনের কয়েক ঘণ্টা আগেও সিআইএসএফ-বিতর্ক জিইয়ে থাকল এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। আধা সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে ঘিরে সম্প্রতি তেতে রয়েছে বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস। ছাত্রছাত্রীরা পোস্টার সাঁটিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যা থেকেই রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে লেখা একটি খোলা চিঠি ঘুরতে থাকে ছাত্রছাত্রী হোয়্যাটস অ্যাপ গ্রুপে। পরে জানা যায়, ওই চিঠি হ্যান্ডবিল আকারে ছাপিয়েছে ছাত্র সংগঠন ডিএসও। তারা বিশ্বভারতী চত্বরে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে বেশ কিছু জায়গায় এই খোলা চিঠি পোস্টার আকারেও সাঁটিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। ডিএসও-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুদাম সাহা বলেন, ‘‘আমরা প্রথম দিন থেকেই বিশ্বভারতীর এই হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এর আগেও পোস্টারিং করেছি। আমরা চাই, আমাদের এই চিঠি রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছক। সমাবর্তনের দিনেও রাষ্ট্রপতির কাছে এই চিঠি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব। না ঢুকতে দিলে ক্যাম্পাসের বাইরে আমাদের প্রতিবাদ তুলে ধরব।’’

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, আজ, সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে রাষ্ট্রপতি রবীন্দ্রনাথের বাসভবন ঘুরে দেখবেন। সেখান থেকে আম্রকুঞ্জে সমাবর্তনের মঞ্চে পৌঁছনোর পরে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তরীয় দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকে বরণ করা হবে। তার পরে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের হাতে উপহার হিসেবে রবীন্দ্রনাথের আঁকা ছবির রেপ্লিকা তুলে দেবেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের উপস্থিতিতে মঞ্চে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে সপ্তপর্ণী দেওয়ার কথা আছে। সমাবর্তনের ভাষণ দেবেন উপাচার্য, রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতি। সমাবর্তনের অনুষ্ঠান শেষে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে শান্তিনিকেতন ঘুরে দেখার কথা রাষ্ট্রপতির। তার মধ্যে রবীন্দ্র সংগ্রহশালাও রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর পরে কুমিরডাঙা হেলিপ্যাড থেকে দুর্গাপুর বিমানবন্দরে পৌঁছবেন রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা।

এই সেই চিঠি

এ দিন বিকেলে হেলিকপ্টার থেকে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের কনভয় পৌঁছয় শান্তিনিকেতনের রথীন্দ্র অতিথি গৃহ এবং রতন কুঠি অতিথিশালায়। রথীন্দ্র অতিথি গৃহে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান উপাচার্য। বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্রামের পরে সন্ধ্যায় রথীন্দ্র অতিথি গৃহে কয়েকজনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রপতি।

রবিবার থেকেই শান্তিনিকেতন জুড়ে নিরাপত্তা ছিল জোরদার। বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে গেট। নাকা চলছে শান্তিনিকেতনে ঢোকা ও বেরনোর সব পথে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রশাসনের তরফ থেকে অফিসার-সহ সাড়ে ১৪০০ জনের বাহিনী তৈরি করা হয়েছে। রবিবার থেকেই তা মোতায়েন হয়েছে।’’ ৬০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার, ১৪০ জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসার, আটজন এসপি পদমর্যাদার অফিসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের নিরাপত্তায় আইজি, ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসারেরা থাকছেন। সমাবর্তনের সভাস্থল আম্রকুঞ্জ-সহ বিকল্প অনুষ্ঠান স্থল নাট্য ঘরে প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলি ঠিকঠাক কাজ করছে বলেও নিরাপত্তা আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। যে ড্রোন দু’টি সমাবর্তনের সময় নজরদারিতে রাখা হবে সেগুলি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে। পুলিশ ও অন্যান্য সরকারি এজেন্সির সঙ্গে অনুষ্ঠানস্থলের বিভিন্ন গেটে বিশ্বভারতীর প্রায় ৩০০ জন অধ্যাপক, কর্মী ,ছাত্র-ছাত্রীদের ভলেন্টিয়ার হিসেবে রাখা হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE