কলেজে ঢুকে ছাত্রী, শিক্ষিকাদের উত্যক্ত করা, আড্ডা দেওয়ার অভিযোগ ছিলই, এ বার বহিরাগত কিছু যুবকের বিরুদ্ধে পরীক্ষা চলাকালীন কর্তব্যরত শিক্ষাকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ঘটনা।
শিক্ষাকর্মীর সঙ্গে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কলেজ চত্বরে এমন ঘটলে কর্মবিরতির পথে হাঁটবেন বলে মঙ্গলবার অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষাকর্মীরা। শিক্ষাকর্মীদের এই অবস্থানকে সমর্থন করেছে কলেজের শিক্ষক সংসদও।
বুধবার যথারীতি পরীক্ষা হলেও, কলেজের অধ্যক্ষ তপন কুমার পরিচ্ছা এ ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ করছেন তা সব পক্ষকে জানিয়েছেন। তবে আশানুরূপ ফল না পেলে তাঁদের সিদ্ধান্ত থেকে সরবেন না জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষাকর্মীরা।
শিক্ষাকর্মী, শিক্ষক ও পড়ুয়াদের একাংশের মৌখিক অভিযোগ, কয়েক বছর আগে কলেজ ছেড়েছেন তেমন কয়েক জন প্রাক্তন ছাত্রের মদতে প্রতি দিন বহিরাগতরা সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ প্রাঙ্গণ দাপিয়ে বেড়ায়। বৈধ ছাত্র সংগঠন না থাকায় তারাই কার্যত কলেজের ‘দাদা’। অভিযোগ, ছাত্রীদের উত্যক্ত করা হয়। তাদের ‘নিশানা’য় কলেজ শিক্ষিকারাও। বহিরাগতদের সব চেয়ে প্রিয় আড্ডার জায়গা কলেজের জনসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সামনের বাস্কেটবল মাঠ। সপ্তাহ দু’য়েক আগে কলেজ অধ্যক্ষকে বহিরাগতদের কলেজে ঢোকা বন্ধ করে কলেজের সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। কিন্তু লাভ যে কিছু হয়নি, মঙ্গলবারের ঘটনা তার প্রমাণ।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশে কলেজে দ্বিতীয় সেমেস্টারের ‘কমিউকেটিভ ইংলিশ’ পরীক্ষা চলাকালীন বহিরাগতদের হাতে শারীরিক ভাবে ‘হেনস্থার’ শিকার হন কলেজের অস্থায়ী শিক্ষাকর্মী মধুসূদন বিশ্বাস। তার পরেই প্রতিবাদের স্বর জোরাল হয় শিক্ষাকর্মী, শিক্ষকদের।
মধুসূদনবাবু বলেন, ‘‘পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও খাতা দেওয়া হলেও বহিরাগতরা কলেজের মধ্যেই ছিল। কেউ কেউ পরীক্ষার হলেও ঢুকে পড়েছিল। দরজা আগলে দাঁড়িয়েছিল কেউ কেউ। আমার ১০৭ নম্বর ঘরে ডিউটি ছিল। ওদের দাপটে হলে ঢুকতে না পেরে প্রতিবাদ করায় হেনস্থার শিকার হতে হয়।’’
কলেজে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন কলেজে শিক্ষক সংসদের সম্পাদক দেবব্রত সাহা। তিনি বলছেন, ‘‘পড়ুয়াদের পরীক্ষার সময় সাহায্য করার অন্যায় উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ কেউ এসেছিল। হতে পারে সেই দলে কিছু প্রাক্তন ছাত্রও ছিল। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক জন কলেজ কর্মীর হেনস্থা হওয়ার ঘটনা বাঞ্চনীয় নয়।’’
সমস্যা যে হয়েছে তা মানছেন অধ্যক্ষ তপনবাবু। তিনি বলছেন, ‘‘পরীক্ষা চলাকালীন আগের দিন পুলিশ চাইলেও কোনও একটা সমস্যায় তা হয়নি। বুধবার পুলিশ ছিল। এ ছাড়া আমি লিখিত ভাবে বিষয়টি সিউড়ি থানা ও জেলা পুলিশ সুপারকে জানাচ্ছি। ছাত্রদের
জানিয়েছি পড়ুয়া ছাড়া কেউ যেন পরীক্ষাহলের কাছে না আসে। পরীক্ষাপর্ব মিটলে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করে সমস্যা মেটানোর ভাবনা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy