Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
বাঁকুড়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে জল্পনা

সভাপতি বাছতে সাবধানী তৃণমূল

মঙ্গলবার জেলার বাঁকুড়া ১, বাঁকুড়া ২, ওন্দা, ছাতনা, শালতোড়া, গঙ্গাজলঘাটি, বড়জোড়া ও মেজিয়া ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন হয়েছে।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:০৮
Share: Save:

কোথাও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে মেপে পা ফেলা, কোথাও আবার চমক। জেলার পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন পর্ব এ ভাবেই শুরু করল তৃণমূল। যা নিয়ে দলেরই অন্দরে শুরু হয়েছে আলোচনা। জেলা নেতাদের অনেকেই আড়ালে মানছেন, লোকসভা ভোটের আগে জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে সবাইকে এক করাই এখন লক্ষ্য।

মঙ্গলবার জেলার বাঁকুড়া ১, বাঁকুড়া ২, ওন্দা, ছাতনা, শালতোড়া, গঙ্গাজলঘাটি, বড়জোড়া ও মেজিয়া ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন হয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল বিরোধী কাজের জন্য ছাতনার নেতা বঙ্কিম মিশ্রকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। পরে ছাতনা কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী শুভাশিস বটব্যালের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে লড়েন বঙ্কিম। ওই ভোটে আরএসপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান শুভাশিস। হারের জন্য বঙ্কিমের নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়াকে অনেকাংশে দায়ি করেছিলেন দলের কেউ কেউ।

পঞ্চায়েত ভোটের কয়েক মাস আগে বঙ্কিমকে দলে ফিরিয়ে নেয় তৃণমূল। এ বার ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটে জিতেছেন। এ দিন দল তাঁকে সহ-সভাপতির পদ দিয়েছে। বঙ্কিম বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে আমি কোনও দিন দলের বিপক্ষে যাইনি। দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা সুষ্ঠু ভাবে পালন করতে চাই।”

গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তীর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা নিমাই মাজির বিবাদ দীর্ঘ দিনের। নানা অভিযোগ তুলে প্রদীপকে সভাপতির পদ থেকে সরানোর দাবিতে একাধিকবার জেলা নেতাদের কাছে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল নিমাইকে। যদিও প্রদীপ বরাবরই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। নিমাইকে এ বার গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে দল। কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, দুই নেতার দ্বন্দ্ব মেটাতেই এই পদক্ষেপ। নিমাই বলেন, “দল আমাকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।”

গত পঞ্চায়েত ভোটে বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আসন সংরক্ষিত ছিল। এ বার আসনটি সংরক্ষণমুক্ত। পদের দাবিদার হিসেবে একাধিক জন উঠে এসেছিলেন। শোনা যাচ্ছিল বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়, বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সহ-সভাপতি কালীপদ মুখোপাধ্যায় এবং বড়জোড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অর্চিতা বিদের নাম। শেষ পর্যন্ত দল বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির গত বারের সভাপতি কাজল পোড়েলকেই এ বারও দায়িত্ব দিয়েছে।

গত বিধানসভা ভোটে বড়জোড়া কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী সোহম চক্রবর্তী পরাজিত হন সিপিএমের কাছে। সেই হারের জন্য বড়জোড়ায় দলের গোষ্ঠিদ্বন্দ্বকেই দায়ি করেছিল দলের একটি অংশ। এ দিন কাজলকেই ফের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ায় দলের একাংশ মনে করছেন, নতুন কাউকে সভাপতি করলে দলের নেতাদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই বিতর্ক রুখতেই বড়জোড়ায় মেপে পা ফেলেছে তৃণমূল।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান বলেন, “সমস্ত সমিতিতেই দলের ঠিক করে দেওয়া ব্যক্তিই সভাপতি ও সহ-সভাপতি হয়েছেন। সবাই দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE