মুকুটমণিপুর লাগোয়া গোড়াবাড়ির হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দুপুরে। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়
হেলিপ্যাড ঘিরে ব্যারিকেড। বাইরে থেকে ‘দিদি-দিদি’ বলে চিৎকার করেছিলেন। নজরে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুকুটমণিপুর লাগোয়া গোড়াবাড়ির পরিত্যক্ত কংসাবতী সেচ কলোনির ওই বধূরা বেহাল আবাসন নিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা সাদা কাগজে লিখে এনেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এক জন এসে সেই কাগজ নিয়ে গিয়েছেন। অবস্থা ফেরার আশা দেখছেন মধুমিতা সরকার, কবিতা দত্ত, মিঠু গড়াইরা।
কংসাবতী সেচ বিভাগের জেলার এক আধিকারিক জানান, অনেক বছর আগেই ওই কলোনি পরিত্যক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মধুমিতাদেবীরা জানান, এখন সেখানে প্রায় পঞ্চাশটি পরিবার বসবাস করে। কেউ তিন দশক, কেউ আরও বেশি সময় পরিবার নিয়ে রয়েছেন। মাথার উপরে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ফেটে গিয়েছে। ত্রিপল বা প্লাস্টিকের চাদরে ঢেকেও বৃষ্টির জল আটকানো যায় না। পানীয় জল বন্ধ হয়েছে অনেক আগে। বছর দুয়েক আগে বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দেওয়া হয়েছে। তখন থেকে হ্যারিকেনের আলোই ভরসা পরিবারগুলির। নানা জায়গায় আর্জি জানিয়ে লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁদের।
মধুমিতাদেবী বলেন, “আমরা উদ্বাস্তু ছিলাম। কলোনির আবাসনগুলি ফাঁকা থাকায় সেখানে বসবাস শুরু করি। এখন আর থাকার মতো পরিবেশ নেই। খুব সমস্যায় দিন কাটাচ্ছি।” কবিতাদেবী জানান, তাঁর শ্বশুর ছিলেন সেচ বিভাগের কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘সেই সূত্রেই আমরা আবাসনে উঠেছিলাম। শ্বশুরমশাই মারা গিয়েছেন। স্বামী দিনমজুর। এখন আর অন্য কোথাও গিয়ে বাড়ি বানানোর ক্ষমতা নেই। তাই এই ভাঙা ছাদের নীচে থাকতে হচ্ছে।”
সফরসূচিতে পরিবর্তন করে রবিবার বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ গোড়াবাড়ি এলাকার হেলিপ্যাডে নামে তাঁর কপ্টার। ওই বধূরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী আসবেন শুনে আগে থেকেই তাঁকে সমস্যার কথা জানাবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। মিঠুদেবী বলেন, “কয়েক বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী বারিকুলে এসেছিলেন। তখন তাঁর কাছে একটা কাজ চেয়েছিলাম। তার পরেই একটি স্কুলে রান্নার দায়িত্ব পাই। তখন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আমার খুব ভরসা। আমরা নিশ্চিত, তিনি আমাদের আবেদনপত্র দেখলে নিশ্চয় কিছু ব্যবস্থা করবেন।”
ওই বধূদের দাবি, রাজ্য সরকার তাঁদের স্থায়ী বাড়ি বানিয়ে দিক। কংসাবতী সেচ বিভাগের জেলার এক আধিকারিক বলেন, “পরিত্যক্ত কলোনির বাসিন্দারা বিদ্যুতের বিল না মেটানোয় সংযোগ কাটা হয়েছে। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যা নির্দেশ দেবে, তা পালন করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy