‘মাস্ক’ না পরে বাড়ির বাইরে গল্পগুজব ভুঁইয়াপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
গলিতে ঢোকার মুখে দেখা গেল তিন-চার জন জমিয়ে খোশগল্পে ব্যস্ত। বিষয় করোনা-সংক্রমণ। এক জন বলছেন, ‘‘আর কলকাতা-মুম্বই নয়, একেবারে আমাদের পাড়াতেই করোনা চলে এল। সেই জন্যই তো এত পুলিশ।’’ এ দিকে, তাঁদের কারও মুখেই ‘মাস্ক’ নেই। ক্যামেরা বের করতেই সরে পড়লেন। পুরুলিয়া শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ভুঁইয়াপাড়ায় এমনটা দেখা গেল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ।
গলির মুখে লাগানো হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড। নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গতিবিধির উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ জারি হয়েছে। ওই দিন সকালে পুলিশ এলাকায় গিয়ে বলে এসেছে কী ধরনের সতর্কতা মানতে হবে। কিন্তু শুক্রবারও দেখা গিয়েছে পুরুলিয়া শহরের ভুঁইয়াপাড়ার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এ সতর্কতার কোনও বালাই নেই। শুক্রবার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’-এর বাইরে কেউ না বেরোলেও ‘মাস্ক’ ছাড়াই ভিতরের গলিতে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘বিষয়টি আমরা দেখছি।’’
ভুঁইয়াপাড়ার কিছু বাসিন্দা শহরের বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে রুনু ভুঁইয়া বলেন, ‘‘যে বাড়িতে কাজ করি, তারা বলে দিয়েছে এখন যাওয়ার দরকার নেই। এখানে করোনা-সংক্রমণ হওয়ার পরে, আমার মতো পাড়ার আরও কয়েকজনের কাজ বন্ধ রয়েছে।’’ ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ঘিরে আরও কিছুটা এলাকা ‘বাফার’ জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানেও জারি রয়েছে ‘লকডাউন’। শুক্রবার বিকেলে ঘুরে দেখা গেল মিশ্র ছবি। কারও মুখে ‘মাস্ক’ রয়েছে। কেউ ‘মাস্ক’ ছাড়াই ঘুরছেন। সাত নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কনটেনমেন্ট জ়োনে পাহারাও রয়েছে। কিন্তু বাফার জোনে মানুষজন সতর্কতা মেনে চলছেন বলা যাবে না।’’
তবে বিভিন্ন ব্লক এলাকায় তৎপরতা চোখে পড়েছে। বাঘমুণ্ডির সুইসা-তুন্তুড়ি পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বুদ্ধেশ্বর মাছুয়ার জানান, পুলিশ আগেই মাইক নিয়ে ঘোষণা করে গিয়েছিল। তা ছাড়া, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা মোতায়েন রয়েছেন। যে বাড়িতে সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘জিনিসপত্র বা পানীয় জল যা দরকার হচ্ছে, পড়শিরাই আনতে সাহায্য করছেন।’’
রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বড়রা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে এক সঙ্গে ছ’জনের করোনা-সংক্রমণ ধরা পড়ে। প্রশাসন জানিয়েছে, পাড়ার প্রায় ৬৫টি পরিবারের বাইরে বেরনো বন্ধ করতে তাঁদের খাবার ও দরকারি অন্য জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy