প্রতীকী ছবি।
ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচইয়ের মধ্যে ঝালদায় এক ‘চিকিৎসক’-এর চেম্বারের ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়ায় জল্পনা শুরু হয়েছে। ঝালদার নামোপাড়ায় এই চেম্বার কয়েকদিন আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চেম্বারের বাইরে দেওয়ালে ওই ‘চিকিসকের’ নামে যে বিজ্ঞাপন লেখা ছিল, তাও রাতারাতি মুছে ফেলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই ব্যক্তি প্রেসক্রিপশনে নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি-সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখ করতেন, তা আসল কিনা তা খতিয়ে দেখতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে আর্জি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নামোপাড়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে রোগী দেখছেন বিমল কুইরী নামে ওই ব্যক্তি। তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির প্রেসক্রিপশনে ‘এমবিবিএস (আইসিএএম), কলকাতা’ বলে উল্লেখ রয়েছে। তাঁর রোগীদের কাছে শুনেছি, তিনি নিজেকে ‘জেনারেল ফিজিসিয়ান ও শিশুরোগ অভিজ্ঞ’ বলেও উল্লেখ করতেন।’’ এলাকা সূত্রের খবর, প্রতিদিন দু’বেলা করে রোগী দেখতেন। আগে তিনি ফি নিতেন ৫০ টাকা। ইদানীং তা ৮০ টাকা করেছিলেন। সম্মানীয় চিকিৎসক হিসেবে শহরের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা যেত।
কিন্তু সেই ‘চিকিৎসক’ হঠাৎ করে চেম্বার বন্ধ করে দেওয়ায় সন্দেহ ঘনায়। এলাকার বাসিন্দা সঞ্জু বাগদি বলেন, ‘‘চেম্বার বন্ধ করে দিয়ে ডাক্তারবাবুর বিজ্ঞাপনও মুছে ফেলায় কেমন যেমন ঠেকছে। তাই সবাই মিলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এ নিয়ে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছি।’’
যাঁর বাড়িতে চেম্বার চলত, সেই গোবিন্দ অগ্রবাল বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে উনি বললেন, চেম্বার বন্ধ থাকবে। কারণ জানাননি।’’
কী বলছেন ‘ডাক্তারবাবু’? বিমলবাবুর দাবি, তিনি মোটেই ভুয়ো চিকিৎসক নন। বোর্ডে অল্টারনেটিভ মেডিসিন উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রেসক্রিপশনের প্যাডে যে ‘এমবিবিএস’ লেখা? বিমলবাবুর কথায়, ‘‘আমি অল্টারনেটিভ মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করে পাস করেছি। আমাদের পাঠক্রমের ডিগ্রির পুরো নাম ব্যাচেলার অফ মেডিসিন, ব্যাচেলার অফ সায়েন্স। তাই ‘এমবিবিএস’ ডিগ্রির উল্লেখ করেছিলাম।’’ তিনি জানান, তবে চারপাশে এ নিয়ে হইচই হওয়ায় তিনি আগাম সতর্কতা হিসেবে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, ‘কে কোথায় বোর্ডে কী লিখে রোগী দেখছেন, জানা সম্ভব নয়। তবে অভিযোগ এলে ওই ব্যক্তিকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। তারপর প্রয়োজনে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ঝালদার বিএমওএইচ দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘নির্দেশ পেলে তদন্ত করব।’’ আর বিমলবাবু পরিস্থিতি এখন আগের মতো নেই বুঝে বলছেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর যদি অনুমতি না দেয়, রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়ে, পারিবারিক পেশা চাষবাসেই ফিরে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy