Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

দু’মাসে ‘টার্গেট’ ১৪ হাজার শৌচাগার

চার বছর আগে ৩৮ হাজার ৭১২টি শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্র ছিল পাত্রসায়র ব্লকে। এখনও পর্যন্ত বাকি রয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার।

সচেতনতার বার্তা নিয়ে পাত্রসায়রের পথে। ছবি: শুভ্র মিত্র

সচেতনতার বার্তা নিয়ে পাত্রসায়রের পথে। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০০:০২
Share: Save:

ভোর হলেই বাঁশঝাড়ে কিংবা পুকুর পাড়ে শৌচকর্ম সারতে যাওয়া বন্ধ হয়নি। ফলে নোংরাবাহিত জল থেকে দূষণ ও রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বাঁকুড়া জেলার অন্যান্য এলাকার মতো পাত্রসায়র ব্লকেরও বিভিন্ন গ্রাম থেকে দূর হয়নি। তাই গ্রাম পরিচ্ছন্ন রাখার শপথ নিয়ে জনগণকে সচেতন করতে পথে নামল স্কুল ছাত্রীরা। তাদের সঙ্গেই সাইকেলে প্রচার অভিযানে থাকলেন পাত্রসায়র ব্লক ও বিষ্ণুপুর মহকুমার আধিকারিকেরাও।

মঙ্গলবার ‘নির্মল পাত্রসায়র’ ব্লক গড়ে তোলার ডাক দিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পাত্রসায়ের ব্লক প্রশাসন। ছিলেন মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল, বিষ্ণুপুর মহকুমার দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নীলাঞ্জন তরফদার ও জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস, পাত্রসায়রের বিডিও অজয়কুমার সাহা ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

প্রশাসন সূত্রে খবর, চার বছর আগে ৩৮ হাজার ৭১২টি শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্র ছিল পাত্রসায়র ব্লকে। এখনও পর্যন্ত বাকি রয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার। বিডিও বলেন, ‘‘আমাদের চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। তবে তিন মাসের মধ্যেই ঘরে ঘরে শৌচালয় তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।’’ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ আসতে দেরি করায় কিছুটা সমস্যা রয়েছে।

এ দিন পাত্রসায়র ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েত থেকে আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ছাড়াও এসেছিলেন বহু সাধারণ মানুষ। যাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যাই ছিল বেশি। বেউর গ্রামের শিখা সেন, বেতুর গ্রামের রীনা রায়, হাটকৃষ্ণনগরের কেয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামদাসপুরের কবিতা দে বলেন, ‘‘এ দিন মঙ্গলবার তাঁরা অনেকেই পরিবারের মানুষদের মঙ্গলকামনায় দুপুরে বিপত্তারিণীর পুজো করবেন। তার আগে রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে নিজেদের মতোই পরিবারের লোকেদের দূরে রাখতে সবাইকে শৌচাগার ব্যবহারে সচেতন করতে তাঁরা পথে নেমেছেন।’’

তাঁরা জানাচ্ছেন, এলাকার জঙ্গলে মাঝে মধ্যেই হাতি ঢুকে পড়ে। ভোরে শৌচকর্ম করতে গিয়ে হাতির হানায় অনেকেরই প্রাণ গিয়েছে। তারপরেও শৌচাগার তৈরির প্রয়োজনীয়তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। ওই মহিলারা বলছেন, ‘‘আমরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করছি, মোটা টাকা খরচ করে মোবাইল ফোন কেনা গেলে পঞ্চায়েতের আর্থিক সাহায্য নিয়ে বাড়িতে শৌচালয়ও তৈরি করা সম্ভব। অনেকে বুঝছেন।’’

বকুল দত্ত, চন্দ্রাণী হালদার, শিউলি পাঁজা প্রভৃতি ছাত্রীদের কথায়, ‘‘সবাই নিজের নিজের গ্রামকে ভালবাসলে, এক দিন আমাদের পাত্রসায়র ‘নির্মল ব্লক’ হয়ে উঠবে। সবাইকে এখন থেকেই সেই ভালবাসার কাজ শুরু করার ডাক দিতেই আমাদের সাইকেল পদযাত্রা।’’ সাইকেলে তাদের সঙ্গী বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসকের আশা, ‘‘বেশি দিন নয়, সবাই চাইলে দু’মাসের মধ্যেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা এসে পাত্রসায়রকে নির্মল ব্লক ঘোষণা করবেন। এখানকার বাসিন্দারা তা চাইলেই সম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toilet awareness Bankura Patrasayar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE