Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দরকারে স্কুলে পোঁতা যাবে সবুজশ্রীর গাছ

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ বলছেন, ‘‘জেলায় ২৪০০ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। বছর কয়েক আগে একটি সমীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে প্রায় ৭০০ একর জমি স্কুল প্রাঙ্গণে এমনিই পড়ে রয়েছে। সবুজশ্রী প্রকল্প চালু হাওয়ার পর, তাই ওই জমিই কাজে লাগাতে চাইলাম।’’

সবুজশ্রী প্রকল্পের গাছ এখন বসবে স্কুলেও।—ফাইল চিত্র।

সবুজশ্রী প্রকল্পের গাছ এখন বসবে স্কুলেও।—ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০২:৫০
Share: Save:

নবজাতকের জন্মের সঙ্গে তার পরিবার পাবে মূল্যবান একটি গাছের চারা। শিশুটির নামে গাছটির নামকরণও হবে। একসঙ্গে দুই প্রাণকে বড় করে তোলার গুরুদায়িত্ব পরিবারটির। এই দুই বড় হওয়ার আন্তঃসম্পর্কও রয়েছে। ভবিষ্যতে চারাগাছটি মহিরুহ হয়ে এ দিনের শিশুর আগামী দিনের প্রয়োজন মেটাবে। গত বছর থেকে শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের নতুন প্রকল্প ‘সবুজশ্রী’। এ বার ওই প্রকল্পকে কাজে লাগিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার ভাবনা নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। যাতে প্রকল্পও সফল হয়, লাভবান হয় পড়ুয়া এবং স্কুলও।

কী সেই ভাবনা?

গাছের চারা পেলেও এমন অনেক পরিবার রয়েছেন, যাঁদের বাড়ির উঠোনে একফালি জমি নেই। তা হলে সেই পরিবারগুলি গাছ লাগাবেন কোথায়। এখানেই এগিয়ে এসেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। তাদের প্রস্তাব জেলার স্কুলগুলিতে পড়ে থাকা জমিতে চাইলে ওই পরিবারের লোকজন এসে সবুজশ্রী প্রকল্পে পাওয়া শিশুর নামের গাছটিকে লাগাতে পারেন। গত মাসে এমনই এক প্রস্তাব জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীর কাছে পাঠান প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ। সাধুবাদ জানিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে সাত দিনের মধ্যেই সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন জেলাশাসক।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ বলছেন, ‘‘জেলায় ২৪০০ প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। বছর কয়েক আগে একটি সমীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে প্রায় ৭০০ একর জমি স্কুল প্রাঙ্গণে এমনিই পড়ে রয়েছে। সবুজশ্রী প্রকল্প চালু হাওয়ার পর, তাই ওই জমিই কাজে লাগাতে চাইলাম।’’ তাতে স্কুলের লাভ মূলত দুটি। এক, স্কুল পাবে সবুজের ছোঁয়া। দুই, নিজের সন্তানের নামের যে গাছটিকে স্কুল প্রাঙ্গণে এত দিন কোনও বাবা-বা বড় করলেন, তাঁরা নিজেদের সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর তাগিদ অনুভব করবেন। তাতে বাড়বে শিক্ষার হার। জেলাশাসক বলেন, ‘‘গাছ বিলি করতে গিয়ে জমি না থাকার সমস্যা ছিলই। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ এগিয়ে আসায় ধন্যবাদ। আমি ওই প্রস্তাবের কথা বন দফতর, স্বাস্থ্য দফতর ও বিডিওদের জানিয়েছি।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কত শিশু জন্মগ্রহণ করছে, স্বাস্থ্য দফতর মারফত সেই তথ্য আসে জেলা ও ব্লক প্রশাসনের কাছে। কত গাছের চারা প্রয়োজন সেটা জেলা ও ব্লক প্রশাসন মারফত বন দফতরের কাছে পৌঁছয়। কত নতুন শিশু জন্ম নিল, সাধারণত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকেই স্থানীয় বিডিওকে এ ব্যাপারে তথ্য দিলে সেটা বন দফতরের রেঞ্জ অফিসে পাঠান বিডিওরা। গাছের চারা পেলে সেটা গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেমে সদ্যোজাতের পরিবারে পৌঁছে যায়। জেলা এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলছেন, ‘‘জেলায় গাছের চারার চাহিদা প্রায় ৫০ হাজার। অন্তত ২০ শতাংশ পরিবারে গাছ লাগানোর জায়গার অভাব রয়েছে। সে দিক এই প্রাথমিক শিক্ষা সংদদের প্রস্তাব সাধুবাদযোগ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE