Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটক সুরক্ষায় পুলিশ কেন্দ্র সোনাঝুড়িতে

বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে শান্তিনিকেতন সোনাঝুড়ি হাটে তৈরি হচ্ছে পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। হাটের প্রায় দু’হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে তৈরি ওই সহায়তা কেন্দ্রের আশপাশেই থাকছে উপড়ে যাওয়া বা পড়ে থাকা গাছের শিকড় দিয়ে শিল্পীদের তৈরি কারুকার্য। যার পোশাকি নাম ‘রুট গার্ডেন’।

নির্মাণ: সোনাঝুড়ি হাটে পুলিশ সবায়তা কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

নির্মাণ: সোনাঝুড়ি হাটে পুলিশ সবায়তা কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৯
Share: Save:

বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে শান্তিনিকেতন সোনাঝুড়ি হাটে তৈরি হচ্ছে পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। হাটের প্রায় দু’হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে তৈরি ওই সহায়তা কেন্দ্রের আশপাশেই থাকছে উপড়ে যাওয়া বা পড়ে থাকা গাছের শিকড় দিয়ে শিল্পীদের তৈরি কারুকার্য। যার পোশাকি নাম ‘রুট গার্ডেন’।

আন্তর্জাতিক ভাবে পর্যটনের তালিকায় বহু দিন আগেই পাকাপাকি ঠাঁই হয়েছে রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে এখানকার প্রধান আকর্ষণ শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক পরিবেশ তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়াও শান্তিনিকেতনের গ্রামাঞ্চল এবং লাগোয়া জঙ্গল, কোপাই-খোয়াইও শহরের পর্যটকদের বিশেষ পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এ বার সেই পর্যকদেরই ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দিতে বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে খোয়াই হাটে তৈরি হয়েছে ওই পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। সেখানে সব সময়ই থাকবেন পুলিশকর্মীরা। হাটের দিন অর্থাৎ শনিবার ও রবিবার বা কোনও উৎসবের সময় আরও বেশি পুলিশ সেখানে থাকবেন বলে জানান বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘পর্যটকদের সুবিধার কথা ভেবেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’

জায়গা যখন শান্তিনিকেতনের খোয়াই হাট তখন যে-সে ভাবে কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না। পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র নির্মাণেও দেখা গেল অভিনবত্ব। দেশীয় ঘরানায় তৈরি হচ্ছে মূল ঘর। তার সামগ্রী তালের কাঁড়ি, কাঠ, বাঁশ, বাবুই দড়ি, কাঁচ। মাথায় ছাউনি। ঘরের চারদিকে গোল করে ঝুলছে বাঁশের বাতি। মাটির কলসিতে থাকবে জলের ব্যবস্থা। আশপাশে ‘সেভ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’, বৃক্ষরোপণের বিজ্ঞপ্তি। শিল্পী কিংশুক সরকার ও তাঁর স্ত্রী রেশমী বাগচী সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৩০টি গাছের শিকড় দিয়ে কারুকার্য গড়ছেন শিল্পীরা। গাছগুলির মধ্যে রয়েছে তেঁতুল, শিরিষ, নিম। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে শিকড়গুলিকে বাঁচাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরেকটি বিষয়ও রয়েছে। যার নাম ‘উড স্লাইস’। গাছের গুঁড়িকে লম্বায় না কেটে চওড়া করে কাটা হয়েছে। তারপর লোহার দণ্ডে সেটিকে বসানো হয়। তাতেও বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি লেখা হবে। শিল্পী কিংশুক সরকার বলেন, ‘‘সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি বিষয়টি হাটের ব্যবসায়ীদেরও অনুপ্রাণিত করবে। তাঁরাও পড়ে থাকা উপকরণ থেকে নতুন কিছু গড়তে উদ্যোগী হবেন বলে আশা রাখছি। বীরভূম পুলিশের সহায়তা ছাড়া এই ইচ্ছা সফল করা যেত না।’’ এই উদ্যোগে খুশি হাটের ব্যবসায়ীরাও। তাঁরা জানান, এত দিনে অভিভাবক পেলেন তাঁরা। ছোটখাট অনেক সমস্যা হত বিভিন্ন সময়। এ বার হয়তো সে সবের দিন শেষ। উৎসাহ প্রকাশ করেছেন পর্যটকেরাও। তাঁদের বিশ্বাস, পুলিশের এই পদক্ষেপে যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে রেহাই পাবে খোয়াই হাট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE