Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Kali Puja

বাজেয়াপ্ত আতশবাজি

বাসিন্দাদের একাংশ এ বার বাজি পোড়ানোর বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা রতন লিলহা ও দীপঙ্কর পান্ডে বলেন, ‘‘দেওয়ালিতে বাজি পোড়ানো আমাদের পরিবারের পরম্পরা। প্রতি বছর অনেক টাকার বাজি কিনে পোড়ানো হয়। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতিতে বাজি পোড়ালে দূষণের শিকার হবেন অসুস্থেরা। তাই এ বার এক টাকারও বাজি কিনিনি।”

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১১
Share: Save:

বাজি রুখতে কালীপুজোর আগের দিন, শুক্রবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার নানা জায়গায় তল্লাশি চালাল পুলিশ। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন জায়গায় মাইকে প্রচারও চালানো হল। তবে এ দিন বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়র, ছাতনা, বাঁকুড়া-সহ বেশ কিছু থানা এলাকায় বাজি উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ। তার মধ্যে নিষিদ্ধ শব্দবাজি যেমন রয়েছে, তেমনই আতশবাজিও আটক করা হয়েছে।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘কোথাও বাজি পোড়ানো হলে, সাধারণ মানুষকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করার আবেদন জানাচ্ছি আমরা।’’ জেলা পুলিশের কর্তারা জানাচ্ছেন, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, খাতড়া-সহ জেলার ব্লক শহরগুলিতে কালীপুজোর রাতে পুলিশের মোবাইল ভ্যান ঘুরবে। গ্রামাঞ্চলেও পুলিশের গাড়ি টহল দেবে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সর্বত্রই আমাদের নজর থাকছে। কোথাও বেনিয়ম হলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরে, পুলিশ ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে বাজি বিক্রি বন্ধ করে। কালীপুজোর মুখে বৃহস্পতিবার থেকেই বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া, ছাতনা থানা-সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মাইকে প্রচার চালায়। লুকিয়ে বাজি বিক্রি হচ্ছে কি না তা দেখতে বিভিন্ন থানায় তল্লাশিও চলে।

বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পাত্রসায়রের কুশদ্বীপ থেকে তিনশোরও বেশি বিভিন্ন ধরনের বাজি আটক করে পুলিশ। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাত্রসায়রের কুশদ্বীপের মধুসূদন মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযুক্ত পলাতক। তবে সেখান থেকে তুবড়ি, গাছ বোমা-সহ তিনশোরও বেশি বাজি আটক করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, কালীপুজোর সময়ে পাত্রসায়র এলাকায় বাজির বিক্রি ও জোগান বন্ধ রাখতে তৎপর ছিল পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

কালীপুজোর আগে পুরুলিয়ার শহরাঞ্চলে রাস্তার ধারে বাজি বিক্রির পরিচিত ছবি এ বার নেই। পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, ঝলদা, মানবাজার, আদ্রা— বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গিয়েছে বাজির কোনও দোকান বসেনি। তবে কিছু এলাকায় লুকিয়ে গত বছরের বেঁচে যাওয়া কিছু বাজি বিক্রি হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পুলিশের অবশ্য় দাবি, জেলায় কোথাও বাজি বিক্রির অভিযোগ নেই। নেই ধরপাকড়ও।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ: (০৩৪৩) ২৫৪৬৭০৮
বাঁকুড়া পুলিশ কন্ট্রোল রুম: ৯০৮৩২৬৯৩৪৩

পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছর হাইকোর্টের নির্দেশের পরে, জেলা পুলিশের শীর্ষমহল থেকে প্রতিটি থানাকেই বাজি বিক্রি বন্ধে সক্রিয় হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। সেই সঙ্গে বাজি বিক্রেতাদের ডেকে সতর্কও করা হয়। রঘুনাথপুর শহরের বাজি বিক্রেতা বলে পরিচিত দেবরঞ্জন হালদার, মানবাজারের বাজি বিক্রেতা উত্তম দত্তেরা বলছেন, ‘‘এ বার কোনও বাজিই বিক্রি করিনি।’’

বাসিন্দাদের একাংশ এ বার বাজি পোড়ানোর বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা রতন লিলহা ও দীপঙ্কর পান্ডে বলেন, ‘‘দেওয়ালিতে বাজি পোড়ানো আমাদের পরিবারের পরম্পরা। প্রতি বছর অনেক টাকার বাজি কিনে পোড়ানো হয়। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতিতে বাজি পোড়ালে দূষণের শিকার হবেন অসুস্থেরা। তাই এ বার এক টাকারও বাজি কিনিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja Cracker Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE