Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পিকে-র টিম থেকে বলছি, ফোন তৃণমূল কর্মীদের

তৃণমূল সূত্রের দাবি, দলের অন্দরে গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুর এলাকার দুই কর্মী অমলেন্দু মুখোপাধ্যায় ও গুরুপদ গড়াই (দু’টি নামই পরিবর্তিত) দাবি করেছেন, তাঁদের শালতোড়ার বিধায়ক স্বপন বাউড়ির ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির উপরে নজর রাখতে বলেছে ‘পিকে-র টিম’।

প্রশান্ত কিশোর।—ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত কিশোর।—ফাইল চিত্র।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৭
Share: Save:

গ্রামে গিয়ে মন্ত্রী, বিধায়কেরা কি সেখানে রাত কাটাচ্ছেন? সব বাসিন্দার অভাব-অভিযোগ ‘ঠিকঠাক’ শুনছেন— এ তথ্য জানতে কেবল নেতা-বিধায়কদের পাঠানো ছবি, ভিডিয়োর উপরেই ভরসা করছে না ‘পিকে-র টিম’। ‌ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের দল। নেতা, বিধায়কদের গতিবিধি জানতে ওই দলের সদস্যেরা তাঁদেরও ফোন করছেন, যোগাযোগ রাখছেন বলে দাবি বাঁকুড়া তৃণমূলের কর্মীদের একাংশের।

তৃণমূল সূত্রের দাবি, দলের অন্দরে গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুর এলাকার দুই কর্মী অমলেন্দু মুখোপাধ্যায় ও গুরুপদ গড়াই (দু’টি নামই পরিবর্তিত) দাবি করেছেন, তাঁদের শালতোড়ার বিধায়ক স্বপন বাউড়ির ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির উপরে নজর রাখতে বলেছে ‘পিকে-র টিম’।

পেশায় ঠিকাদার অমলেন্দুবাবুর কথায়, ‘‘ফোনটা যখন আসে, তখন পার্টি অফিসে আড্ডা দিচ্ছি। অচেনা নম্বর থেকে এক জন জানালেন, পিকে-র টিম থেকে বলছেন। গড়গড় করে আমার নাম, ধাম বলে দিয়ে শালতোড়ার বিধায়কের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির উপরে নজর রাখতে বললেন। বিধায়ককে দীর্ঘদিন চিনি। কিন্তু কখনও তাঁর কাজের মূল্যায়ন করতে হবে, ভাবিনি।”

মঙ্গলবার স্বপনবাবু গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের ভাডাডি গ্রামে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শোনেন। গ্রামে রাতও কাটান। অমলেন্দুবাবুর দাবি, বিধায়ক ওই গ্রামে কতক্ষণ ছিলেন, কাদের সঙ্গে কী-কী বিষয়ে কথা বলেছেন, কার বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন, কী খেয়েছেন—সে সবের বিবরণ তাঁকে জানাতে বলা হয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ‘পিকে-র টিম’। আর এক তৃণমূল কর্মী গুরুপদবাবুর দাবি, ‘‘কেবল খবরাখবর দেওয়াই নয়, হোয়্যাটসঅ্যাপে নির্দিষ্ট নম্বরে বিধায়কের কর্মসূচির তথ্যও পাঠাতে বলা হয়েছে।’’

কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের দলের নাম ভাঁড়িয়ে অন্য কারও কাছে তথ্য পাঠাতে বলা হচ্ছে না তো? দুই তৃণমূল কর্মীর জবাব, ‘‘সন্দেহ যে হয়নি, তা নয়। কিন্তু দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি।’’

স্বপনবাবু বলেন, “নানা ব্যস্ততায় গ্রামে-গ্রামে যাওয়া কমে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এখন নতুন করে জনসংযোগ ঝালিয়ে নিচ্ছি। কেমন কাজ করছি, হতেই পারে সে খবর অন্যদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে। এতে হয়তো ফাঁকফোকরগুলো ভাল ভাবে চিহ্নিত হচ্ছে। ব্যাপারটা মন্দ নয়।”

একই অভিজ্ঞতা অন্য বিধায়কদেরও। প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ বলেন, “পিকে-র টিমের নির্দেশ মতোই কাজ করছি। শুনেছি, তার পরেও সেই রিপোর্ট অন্য জায়গা থেকে যাচাই করা হচ্ছে।’’ রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, “সন্দেহ নেই, এতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি আরও জোর পাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prashant Kishor TMC Didi Ke Bolo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE