প্রস্তুতি: রবীন্দ্র জন্মোৎসব উপলক্ষে প্রদর্শনী শুরুর আগে। মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে উদয়ন বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮ তম জন্মোৎসব উদ্যাপিত হবে শান্তিনিকেতনে।
অনুষ্ঠান শুরু হবে ভোর পাঁচটায় গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিকের মধ্যে দিয়ে। অন্য সময় বৈতালিকের পরে সানাই বাজে। তবে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর দিন সানাই না বেজে শোনা যায় ‘কবিকণ্ঠ’। বৈতালিকের পরে সাড়ে পাঁচটা থেকে ৬টা ১৫ পর্যন্ত ‘কবিকণ্ঠ’ প্রচারিত হবে উদয়নগৃহ থেকে। সকাল সাতটায় উপাসনার পর পৌনে ন’টা থেকে মাধবীবিতানে শুরু হবে ‘জন্মদিনের অনুষ্ঠান’।
সকাল দশটায় পান্থশালা থেকে বিশ্বভারতী পত্রিকা প্রকাশিত হবে। সন্ধে সাতটা থেকে গৌরপ্রাঙ্গণে শিক্ষাসত্র পরিবেশন করবে নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’। বিশ্বভারতী ছাড়াও বুধবার দিনভর বোলপুর, শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন অংশে রয়েছে কবিগুরুর জন্মদিনের নানা অনুষ্ঠান।
কিন্তু, কেমন ছিল সেকালের রবীন্দ্র জন্মোৎসব? বিশ্বভারতীর সঙ্গীতভবনের অধ্যাপক অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় জানান, রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন শান্তিনিকেতনে প্রথম পালিত হয়েছিল ১৯১০ সালের ২৫ বৈশাখ। সেটি ছিল ৪৯ তম জন্মদিন। এর পরে ১৯১১ সালে তাঁর ৫০ তম জন্মদিন মহাআড়ম্বরে হয়েছিল শান্তিনিকেতনে। সে বছর ‘রাজা’ নাটকের মধ্যে দিয়ে আম্রকুঞ্জে রবীন্দ্র জন্মোৎসব পালিত হয়েছিল। তখন নাচ-গান, কবিকে সংবর্ধনার মাধ্যমে তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠান হত। আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল খোদ কবির উপস্থিতি।
পরে অবশ্য প্রচণ্ড গরমের জন্য ২৫ বৈশাখের আগেই গরমের ছুটি দেওয়ার চল শুরু হয় শান্তিনিকেতনে। ১৯৩৬ সাল থেকে সে জন্য পয়লা বৈশাখে কবিগুরুর জন্মদিন পালনের রীতি শুরু হয়। সে বছর ছিল কবির ৭৫ তম জন্মদিন। শেষ জন্মদিন অর্থাৎ ৮০ তম জন্মদিন ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সে বার কবিগুরু হুইল চেয়ারে বসে ছিলেন উদয়নগৃহে। তাঁর সামনেই ‘সভ্যতার সঙ্কট’ পাঠ করেছিলেন ক্ষিতিমোহন সেন।
শুধু জন্মদিন বলে নয়। কবিগুরুকে নিয়ে এ রকম অনেক স্মৃতি শান্তিনিকেতনের আনাচ-কানাচে ছড়িয়ে। প্রায় সাত দশকের বেশি সময় ধরে পয়লা বৈশাখে পালিত হত রবীন্দ্র জন্মোৎসব। তার পরে বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান আয়োগের নির্দেশে, ১৫ মে’র আগে গরমের ছুটি দেওয়া যাবে না এই নিয়ম চালু হয়। এ দিকে, ২৫ বৈশাখ সাধারণত মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই পড়ে। বিশ্বভারতী খোলা থাকবে আর কবিগুরুর জন্মদিন পালন হবে না, তা তো হয় না। এই নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকে তাই ফের ২৫ বৈশাখ প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে পালন করা শুরু হয় বিশ্বভারতীতে। সেই রীতিই চলছে।
রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনের জন্য উৎসবের মেজাজে শান্তিনেকেতন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy