Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাত লাগালেই ছেঁকা, লক্ষ্মীপুজোর আগে বাজারে আগুন

রামপুরহাট বাজারের ফল-ব্যবসায়ী জাফর শেখ জানান, দুর্গাপুজোর সঙ্গে লক্ষ্মীপুজোয় ফলের দরে হেরফের নেই। কলা প্রতি ডজন ৩০-৪০ টাকা দরে বিকোচ্ছে।

উপাচার: লক্ষ্মীপুজোর ফল কিনতে বাজারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বোলপুরে। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

উপাচার: লক্ষ্মীপুজোর ফল কিনতে বাজারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বোলপুরে। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১৫
Share: Save:

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আগে চাহিদা তুঙ্গে ‘ধানের ছড়া’র। তা নিয়ে বোলপুরে হাজির আশপাশের গ্রামের মানুষ। হাতের কাছে পুজোর এমন উপকরণ পেয়ে খুশি সাধারণ মানুষ।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই বোলপুরের চৌরাস্তার পাশে ধানের ছড়া নিয়ে বসেছেন অনেকে। কুঁচলি গ্রাম থেকে দশ-বারো জন গ্রামবাসী এসেছেন। ধানের ছড়া বিক্রি করছেন পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকায়। যে ছড়ায় যেমন ধান আছে, সেই মতো দাম। বিক্রেতা দুর্যোধন দাস, সত্যনারায়ণ দাস জানান, সব স্তরের মানুষের কথা ভেবেই বিভিন্ন দামে ধানের ছড়া বিক্রি করেন তাঁরা। দীননাথ দাস, ষষ্ঠী দাসের কথায়, ‘‘আট বছর ধরে আসছি। লক্ষ্মীপুজোর আগের দিনেই চলে আসি। বিক্রিও হয় ভালই। এ বছরও হবে আশা রাখছি।’’ তাঁদের কাছে মিলছে পদ্মের চাকা, আঁখ, শিষওয়ালা ডাবও। সে সব কিনতেও ভিড় জমাচ্ছেন বোলপুরবাসী।

রামপুরহাট বাজার থেকে চার ফুটের লক্ষ্মীমূর্তি ৮০০ টাকায় কিনে বাড়ি ফিরছিলেন ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার বেনাগড়িয়া এলাকার এক পাথর ব্যবসায়ী। সঙ্গে কিনেছেন কলা, আপেল, সশিষ ডাব, নারকেল, পেয়ারা, আম, আঙুর আর আতা। ওই ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘মালক্ষ্মীকে নানা ফল, মিষ্টি, উপাচার দিয়ে পুজো দিতে হয়। রামপুরহাট বাজারে ৫০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে আম পেলাম। মায়ের প্রসাদের জন্য আড়াইশো গ্রাম আম কিনেছি।’’ তিনি জানান, এ দিন আঙুর প্রতি কিলোগ্রাম ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হযেছে। আতা ২০০ টাকা দরে। একটা আনারস ৭০ টাকা।

রামপুরহাট বাজারের ফল-ব্যবসায়ী জাফর শেখ জানান, দুর্গাপুজোর সঙ্গে লক্ষ্মীপুজোয় ফলের দরে হেরফের নেই। কলা প্রতি ডজন ৩০-৪০ টাকা দরে বিকোচ্ছে। আপেল ৮০-১০০ টাকায়, নারকেল ৩০-৪০ টাকা, সরবতী লেবু ১০০ টাকা, শশা ৪০-৫০ টাকা, প্রতিটি কমলালেবু ৮-১৫ টাকা, পেয়ারা ৪০-৫০ টাকায়। লক্ষ্মীর ঘটের জন্যে সশিস ডাব প্রয়োজন। রামপুরহাট বাজারে তা বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা দরে। বোলপুর বাজারে ২০ টাকায়। সিউড়ি, সাঁইথিয়া, নলহাটি, দুবরাজপুরের বাজারে দাম ছিল প্রায় একই রকম।

আনাজ বাজারের ছবিটা ছিল একটু অন্যরকম। বিক্রেতারা জানান, দুর্গাপুজোর চেয়ে লক্ষ্মীপুজোতে আলুর দাম প্রতি কিলোগ্রাম দেড় - ২ টাকা বেড়েছে। দুর্গাপুজোয় ৫০ কিলোগ্রাম আলুর বস্তার দাম ছিল ৫৭০ টাকা। লক্ষ্মীপুজোয় তা ৬০০ টাকা। রামপুরহাট, নলহাটি, সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, বোলপুরে ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ২০-৩০ টাকায়। রামপুরহাট বাজারের আনাজ বিক্রেতা বংশী লেট জানান, লক্ষ্মীপুজোয় আলু, বেগুন, করলা, আদা, কুমড়ো, কাঁচালঙ্কা, রাঙা আলুর দাম বেড়েছে। সাঁইথিয়া, নলহাটি, সিউড়ি, দুবরাজপুর, বোলপুরেও একই হাল।

মহম্মদবাজারের আনাজ বিক্রেতা নিখিল দাস, সন্তোষ আকুড়ে ও বিকাশ আকুড়ে জানান, বাজারে যে পরিমাণ ফল বা আনাজের চাহিদা রয়েছে, ততটা জোগান মিলছে না। সে জন্যেই সে সবের দাম বেশি। দুর্গাপুজোর পরে এখনও আড়ত ঠিক ভাবে খোলেনি। বিক্রেতাদেরও বেশি দামে আনাজ কিনতে হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Laxmi Puja Price Commodities Hike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE